April 26, 2024, 2:54 am

মতলব উত্তরে এসিল্যান্ডের প্রচেষ্টায় ১৯ লাখ টাকা পেলেন সৌদি ফেরত অসহায় নারী

মমিনুল ইসলাম:- ১৭ বছর আগে কাজের সন্ধানে সৌদি আরব পাড়ি জমান মালা আক্তার। ভেবেছিলেন দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রবাসে গেলে হয়তো কর্মের সন্ধান পাবেন এবং জীবন মান উন্নত হবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সৌদি আরবের রিয়াদে আব্দুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগদান করেন। সেই থেকে বিনা বেতনে টানা ১৭ বছর কাজ করেছেন তিনি। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়নের তালতলী গ্রামের মৃত. রাজ্জাক সরকারের মেয়ে তিনি।
জানা গেছে, গৃহবন্দী হয়ে বিনা বেতনে কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাই গত ৫ বছর বাড়িতে আসার জন্য মুনিব জানালে তিনি মালাকে বাড়িতে আসতে না করেন। এভাবে একেক একেক করে ১৭ বছর পাড় হওয়ার পরে মালাকে বাড়িতে আসতে সম্মতি দেয় মুনিব আব্দুর রাজ্জাক। তবে তার পাওনাদি বুঝিয়ে দিতে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে মালার চাপে হিসাব দিতে বাধ্য হয়েছে তিনি। মালার পাওনা ৮০ হাজার সৌদি রিয়্যাল দিবে বলে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় গত ৪ মাস আগে। কিন্তু দেশে আসার পর মালা আক্তার বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করলেও তার টাকা পাচ্ছিলেন না। এরমধ্যে গত ৩ মাস আগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহর খবর আসে সৌদি আবের বাংলাদেশ এম্বাসী থেকে মালার বিষয়ে তথ্য নিতে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহ বার বার সৌদি এম্বাসী যোগাযোগ করে মালার পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার (৭ জুন) মালার একাউন্টে রেমিটেন্স বোনাস সহ প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ টাকা জমা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেদায়েত উল্লাহর কাছে এই তথ্য আসার পর মালা আক্তারকে তার কার্যালয়ে এনে তাকে জানানো হলে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, আমার কাছে সৌদি এম্বাসেডর থেকে কল আসার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করার তাকে পাচ্ছিলাম না। পরে আমার তহসিলদার দিয়ে চিরুনি অভিযান দিয়ে মালা আক্তারকে পেয়ে যাই। তারপর তার সমস্ত তথ্য এম্বাসাডরে পাঠাই। তার পাওনা টাকা নিয়ে আমি বহুবার কথা বলেছি। একটা পর্যায়ে টাকা পাবে কি পাবে না সন্দিহান ছিল। সর্বশেষ গত ৬ জুন তাদের সাথে কথা হলে জানান মালার টাকা পাঠানো হয়েছে। বহু চেস্টার পর তার পরিশ্রমের টাকা পাওয়ায় আমি নিজেও আনন্দিত। হয়তো আমার প্রচেষ্টায় টাকাটা পেয়েছে, তবে এটা ওনার দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের পারিশ্রমিক ছিল।
মালা আক্তার (৫২) সাংবাদিকদের বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করছি টাকা পাওয়ার জন্য। সৌদি আরবে বাঙালীরা আমাকে সহযোগিতা করলে সহজেই টাকা পেয়ে যেতাম। অসহায় হয়ে দেশে চলে আসছি। দেশে এসেও অনেক যোগাযোগ করার পর কোন পাত্তা পাইনি। অবশেষে এসিল্যান্ড স্যারের চেষ্টায় আমি টাকা পেয়েছি। আমি এখন খুবই খুশি। স্যার অনেক ভালো মানুষ, আল্লাহ তার ভালো করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা