April 20, 2024, 5:54 am

গাইবান্ধায় ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যার ঘটনায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ওসি (তদন্ত) ও এসআই প্রত্যাহার ওসিকে কারণ দর্শাও নোটিশ জারি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :গাইবান্ধায় অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ পুনরায় অপহরণকারীর হাতে তুলে দেয়ার পর ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন পুলিশ সুপার। মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মজিবর রহমান ও এসআই মোশাররফকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র দেয়ার বিষয়টি জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
ঘটনার পরদিন ১১ এপ্রিল পুলিশ সুপার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তির পর পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ব্যবসায়ী হাসান আলীকে উদ্ধারের পর থানা থেকে অপহরণকারী মাসুদ রানার হাতে তুলে দেয়ার ঘটনায় পুলিশের স¤পৃক্ততার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহাত গাওহারীকে আহবায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়াটার্স) আবুল খায়ের ও পুলিশ পরিদর্শক (ডিআই-ওয়ান) আব্দুল লতিফকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি তদন্ত শেষে ২০ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
গত ৫ মার্চ জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর স¤পাদক কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা। এরপর তাকে উদ্ধারের দাবিতে হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম থানায় অভিযোগ করলে মাসুদের বাড়ি থেকে উদ্ধারের পর অপহৃত ব্যবসায়ী হাসান আলীকে আবারও অপহরণকারী মাসুদের জিম্মায় দেয় পুলিশ। প্রায় একমাস মাসুদের বাড়িতে আটক অবস্থায় থাকার পর গত ১০ এপ্রিল শনিবার মাসুদের বাড়ির টয়লেট থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদে বার্তায় হাসান আলী স্বজনদের জানান, মাসুদ রানা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে মিথ্যা অঙ্গীকার নেয়। ওই দিনই মাসুদকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ১১ এপ্রিল রোববার দলীয় পদ থেকে মাসুদ রানাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা এবং পাদুকা ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানা পুলিশের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় মাসুদ রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে চারদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ঘটনার পরপরই হাসান আলী হত্যার বিচার দাবীতে ফুঁসে ওঠে গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে গঠন করা হয় হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চ।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা