April 26, 2024, 3:09 am

ভারত থেকে আসতে শুরু করেছে পেঁয়াজ

সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবারও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আবার সেখানকার পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসতে শুরু করলো। দীর্ঘদিন বন্ধের পর বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে কর্মরত শ্রমিক ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যস্ততা বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের বাজারে এর প্রভাব পড়বে না বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

শনিবার (২ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় ভারত থেকে ১৯টন পেঁয়াজ বোঝাই একটি ট্রাক বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে। এর মধ্যদিয়ে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। স্থানীয় আমদানিকারক বাবু এন্ট্রারপ্রাইজ এই পেঁয়াজ আমদানি করে। শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে আর কোনও পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেনি।
ঐওখও চঙজঞ চওঈ ২
সাড়ে তিন মাস পর এলো ভারতীয় পেঁয়াজ

হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শাহিনুর রেজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় আমদানিকারকদের এলসি খোলার পর ইতোমধ্যেই ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। পেঁয়াজ রফতানিতে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা নেই। তবে বর্তমানে ভারতে পেঁয়াজের যে বাজার চলছে, তাতে করে প্রতি টন পেঁয়াজ প্রকারভেদে ২৫০ থেকে ২৭৫ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করতে হচ্ছে। যার কারণে দেশের বাজারে চলমান দেশীয় পেঁয়াজের চেয়ে বা তার সমান মূল্য দাঁড়াচ্ছে। তবে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ও রফতানি মূল্য কমলে দেশীয় পেঁয়াজের চেয়ে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হতো। তবে বর্তমান মূল্যে পেঁয়াজ খুব বেশি আমদানি হবে বলে মনে হয় না।’

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন ও সব্বির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকি। কিন্তু ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশ কিছু দিন ধরে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। যার কারণে আমাদের মোকামগুলোতে বেশ পরিমাণে টাকা আটকা পড়ে যায়। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দেশের বিভিন্ন স্থানের পার্টিরা আমাদের ফোন দেওয়া শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা খোঁজখবর নিচ্ছেন। পেঁয়াজ নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ভারত থেকে আবার পেঁয়াজ আসার ফলে বিভিন্ন মোকামে বকেয়া টাকাগুলোও আমাদের উঠে আসবে।’
ঐওখও চঙজঞ চওঈ ৩
সাড়ে তিন মাস পর এলো ভারতীয় পেঁয়াজ
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে সাড়ে তিন মাস ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের এই সিদ্ধান্তের পর বন্দরের আমদানিকারকরা পেঁয়াজের এলসি খুলেছেন। সেই এলসির বিপরীতে শনিবার বিকাল থেকে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামের ওপর কিছুটা প্রভাব তো পড়বেই।’

হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধের পর শনিবার বিকালে বন্দর দিয়ে আবার দুই দেশের মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি-রফতানি শুরু হয়েছে। বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর ফলে বন্দরের আমদানিকারক, সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট, শ্রমিকদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বন্দরের নিত্যদিনের যে আয় সেটিও বাড়বে। পেঁয়াজ কাঁচামাল হওয়ায় বন্দরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালাস করে আমদানিকারকদের সরবরাহ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরিণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে করে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে ২৫০ পেঁয়াজবাহী ট্রাক। আরও আটকা পড়ে আমদানির জন্য খোলা ১০ হাজার টনের মতো এলসি করা পেঁয়াজ। এর পাঁচ দিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আগের টেন্ডারের ১১টি ট্রাকে ২৪৬টন পেঁয়াজ রফতানি করা হয়। যার অধিকাংশ পেঁয়াজ পচা ছিল। ফলে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন বন্দরের আমদানিকারকরা।

যদিও এর পর থেকেই পেঁয়াজ আমদানির জন্য খোলা এলসিগুলোর বিপরীতে পেঁয়াজ রফতানি করতে ব্যবসায়ীরা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে আসছিলেন। এর ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমদানিকারকেরা মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক ও চীন থেকে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা