April 26, 2024, 9:14 am

ঝিনাইদহে উপবৃত্তির টাকা পেতে চরম ভোগান্তি!

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি ভাতাভোগী শিক্ষার্থীদের টাকা তোলা নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরকার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১০০০ টাকা জন প্রতি উপবৃত্তি ভোগীদের “কিডস এলাউন্স” হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ২০২০ সালে। বর্তমানে এই টাকাটি ওঠাতেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তারা। পূর্বে উপবৃত্তির টাকা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে দেওয়া হলেও পরবর্তীতে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং “নগদ” এর মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নগদ এর মাধ্যমে উপবৃত্তির এই টাকা অভিভাবকদের হাতে পৌঁছানোর পূর্বে অনেকেই প্রতারনার শিকার হন। রফিকুল আলম নামের এক অভিভাবকের জানান, উপবৃত্তির টাকা প্রদান করবে এই মর্মে আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে একজন আমার ওটিপি নাম্বার চান, আমি সরল মনে তা দেয়। পরবর্তীতে জানতে পারলাম আমার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সে উপবৃত্তির টাকা তুলে নিয়েছে। কবির হাসান রিমন নামে কালীগঞ্জের একজন নগদ এজেন্ট জানান, নগদ-এ উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর সময় উত্তোলনের পিন নম্বর মেসেজে দেওয়া হয়নি। এতে টাকা তুলতে পারছেন না তাঁরা। কারও পিন নম্বর জানা থাকলেও, তা সঠিক নয় বলে ফিরতি মেসেজ আসছে। পিন নম্বর পুনরায় দিতে (রিসেট) গেলে শেষ ৩ মাসের লেনদেনের মোবাইল সিম নম্বর জানতে চায়। কিন্তু অনেকের নগদ অ্যাকাউন্টে কোনো লেনদেন করা হয়নি। তাই বিকল্প প্রস্তাবে (অপশন টু) গেলে ‘সামথিং ওয়ান্ট রং, প্লিজ কল ১৬১৬৭ ফর ইনফরমেশন’ দেখাচ্ছে। কিন্তু ওই নম্বরে বহুবার চেষ্টা করেও কল যায় না, ব্যস্ত দেখায়।এই ধরনের হাজারো অভিযোগের ভিত্তিতে নগদ একাউন্টে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া সরকার একবার বন্ধ ঘোষণা করে। প্রতারনা থেকে বাঁচতে এখন থেকে ইফটি অফিসের মাধ্যমে অনলাইনে অভিভাবকের মোবাইলে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য মুজিববর্ষের কিডস এ্যালাউন্স এর টাকা পুনরায় নগদের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর তখনি হয়রানি ও বিড়াম্বনার শিকার হন অভিভাবকরা। অভিভাবকদের নগদ হিসাবের পিন নাম্বার আর কাজ করছে না। নতুন করে পিন নাম্বার চেঞ্জ করে ২৪ ঘন্টা পরে টাকা তোলা যাচ্ছে। অভিভাবকদের নিজ নিজ পিন নাম্বার অটোমেটিক কিভাবে চেঞ্জ হলো? এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক নগদ এজেন্ট নতুন পিন নাম্বার করে দেওয়ার কথা বলে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত কেটে নিচ্ছেন অভিবাবকদের হিসাব থেকে। এ ব্যাপারে নগদের ঝিনাইদহ জেলার টেরিটরি অফিসার রেজাউর রহমান জানান,অভিবাবকদের হিসাবের পিন রিসেট করার কারণ হলো ঐ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে যেন কেউ টাকা উত্তোলন করতে না পারে। এজন্য প্রাথমিক ভাবে অভিভাবকরা কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হলেও প্রতারিত হবেন না। তবে আমরা দ্রুতই এর সমাধানের জন্য প্রতিদিন প্রায় তিন হাজারের অধিক পিন রিসেট এর রিকুয়েষ্ট পাঠাচ্ছি অভিভাবকদের নিকট। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিনা বেগম বানু বলেন,ব্যাপারটা আমরাও শুনেছি এবং এটা জাতীয় ইস্যু। এ ব্যাপারে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং হয়েছে। মিটিং এর সদ্ধান্ত অনুয়ায়ি সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাথমিকে অভিভাবকদের কিডস এ্যালাউন্স এর টাকা প্রাপ্তিতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে,যা দুঃখজনক। এটা শুধু কালীগঞ্জের সমস্যা নয়। অভিভাবকদেরকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে। বৃত্তির টাকা যে মোবাইল একাউন্টে যায় সেটা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণেই মনে হয় এমনটি হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে আরও ভালো বলতে পারবেন মোবাইল ব্যাংকিং “নগদ” এর কর্তৃপক্ষ।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা