May 3, 2024, 2:43 pm

নারায়ণগঞ্জে ডিআইজি পরিচয় দানকারী প্রতারক শিহাব গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ভুইগড় রুপায়ন টাউন এলাকা হতে মো: শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকী ওরফে রিহান সিহাব ওরফে দিদারুল ইসলাম রিহান ওরফে আয়ান ওরফে আইমান (৩০) নামে ডিআইজি ও এসপি পরিচয় দানকারী এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পলাতক রয়েছে তার দুই সহযোগি সুমন ও রক্সি। গ্রেফতারকৃত শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকী চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার ফটিকছড়ি গ্রামের মোঃ আবু তাহেরের ছেলে। বর্তমানে সে ফতুল্লার ভূইগড় এলাকায় রূপায়ন ৪৩নং বিল্ডিংয়ের ফ্লাটে বসবাস করে আসছে। প্রতারক শিহাব উদ্দিন ভুয়া ডিআইজি ও এসপি’র পরিচয়ে প্রতারণা করে বিভিন্নভাবে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আআত্মসাৎ করে।
এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার রূপায়ণ টাউন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (ডিপিএসএল) মো: শাকিল সারোয়ার ৮ নভেম্বর বাদী হয়ে শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার তথ্যমতে, চলতি বছরের ২৯ আগষ্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে শাকিল সারোয়ারের ওয়াটস অ্যাপ নাম্বারে ফোন করে মোঃ জাহিদুল ইসলাম সাব্বির নিজেকে ডিআইজি এসবি হোডকোর্টার্স পরিচয় দেয়। এবং বলে মো. শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকী তার ছোট ভাই। শিহাব সিদ্দিকীর থাকার জন্য একটি ফ্লাট প্রয়োজন। তার ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ শহরে গাড়ীর ইঞ্জিনের হোল সেলারের ব্যবসা করার সুবাদে নারায়ণগঞ্জ শহরের রূপায়ণ টাউনে একটি ফ্লাট বাসা ভাড়া নিতে চায়। এর প্রেক্ষিতে রূপায়ণ টাউনের বিধি মোতাবেক মোঃ জাহিদুল ইসলাম সাব্বির তার ভিজিটিং কার্ড ও তার ছোটভাইয়ের পাসপোর্টের ফটোকপি প্রদান করেন।
পরে জাহিদুল ইসলাম সাব্বিরের অনুরোধে রুপায়ন টাউনের ফেস-২ বিল্ডিং নং-৪৩, ফ্লাট নং-এ- ৩ মাসিক ৫৩ হাজার টাকা ফার্নিস্ট হাউজ গ্রহণ করে ১ সেপ্টেম্বর হতে শিহাব সিদ্দিকী বসবাস শুরু করেন। এবং বসবাসের শুরুতে অগ্রীম ১ লক্ষ টাকা জামানত প্রদান করে। পরবর্তীতে নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ না করে বসবাস করে আসছিল। ফলে প্রতারক শিহাব উদ্দিনের নিকট বাসা ভাড়া বাবদ ১ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৪৮ হাজার টাকা, সার্ভিস চার্জ ১২ হাজার টাকা, গ্যাস বিল ৬ হাজার টাকা। মোট ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া গাড়ী ও গাড়ীর খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয়ের জন্য শাকিল সারোয়ারের কাছ থেকে ১০ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে রুপায়ন টাউন সংলগ্ন আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে শিহাব উদ্দিন ৫ লক্ষ টাকা ধার হিসাবে নেয়।
এছাড়াও দুই ঘন্টার মধ্যে পরিশোধের কথা বলে ১৪ অক্টোবর দুপুর পৌনে ১টার দিকে চেকের মাধ্যমে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও নগদ ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নেয় শিহাব সিদ্দিকী। পরে মো.শাকিল সারোয়ারের আইএফআইসি ব্যাংক হিসাবের একাউন্টে টাকা এনপিএসবি ভুয়া মেসেজ করেন। কিন্তু শাকিল সারোয়ারের একাউন্টে টাকা প্রবেশ করেনি। ১১ লক্ষ ৭৫ টাকার ইএফটিএন ভূয়া মেসেজ দেয়। উল্লেখিত টাকাও শাকিল সারোয়ারের একাউন্টে প্রবেশ করেনি। পরবর্তীতে শিহাব সিদ্দিকীর নিকট শাকিল সারোয়ার পাওনা টাকা চাইতে গেলে কথিত ডিআইজি এসবি হেডকোয়ার্টার্স মোঃ জাহিদুল ইসলাম সাব্বিরকে দিয়ে তার ফোন নাম্বারে ফোন করিয়ে টাকা ফেরত প্রদান করবে বলে আশ্বস্ত করে শিহাব সিদ্দিকী।
সবশেষ ১ নভেম্বর শিহাব সিদ্দিকী তার এ্ইচএসবিসি ব্যাংকে তার একাউন্ট থেকে শাকিল সারোয়ারের আইএফসি ব্যাংক একাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা এনপিএসবি ভুয়া মেসেজ পাঠায়। শাকিল সারোয়ারের একাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা এসেছে এবং ব্যবসায়িক ভুল বুঝিয়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে নেয় শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকী। এবং বলে এই ৫ লক্ষ টাকাসহ সমস্ত টাকা নগদে প্রদান করাা হবে। কিন্তু শিহাব সিদ্দকী তার দুই সহযোগি সুমন ও রক্সির যোগসাজসে শাকিল সারোয়ারের কাছ মোট ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় বলে মামলায় উল্লেখ্য করেন শাকিল সারোয়ার।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা