April 26, 2024, 11:20 am

নৌ- শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে না’গঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শনে এসপি মিনা মাহমুদা

স্টাফ রিপোর্টার: সাধারণ নৌ শ্রমিকদের ৭ দফা দাবিতে ডাকা অবিরাম কর্মবিরতি ও ধর্মঘট চলাকালিন সময় যে কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় নৌ পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ নৌ পুলিশ দেশের জনগণের জান-মাল রক্ষার্থে সর্বদা সতর্ক অবস্থানে কাজ করছি।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা (বিপিএম) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এসপি মিনা মাহমুদা আরও বলেন, নৌ-যান শ্রমিকদের বেতন–ভাতা বাড়ানোসহ ৭ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে সারা দেশে দ্বিতীয় দিনের মতো যাত্রীবাহী নৌযান ধর্মঘট চলছে। সোমবার নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে কোনো যাত্রীবাহী নৌযান ছেড়ে যায়নি। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আশাকরি অচিরেই সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানের প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা নৌপথে কর্মব্যস্ত হবেন।

এসময় পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান, উপ-পরিদর্শক মোঃ ফোরকান মিয়া, উপ-পরিদর্শক মোঃ রেজাউল করিম ও মোঃ মনির সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ।

এর আগে, গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ এর ধর্মঘটের ডাকে শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। এর পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরসহ সারা দেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ আছে। নৌ শ্রমিকদের এ ৭ দফা দাবী নিন্মরূপ-

১. নূন্যতম মজুরী ২০,০০০/- টাকা, মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২,০০,০০০/- টাকা, নিয়োগপত্র, রিলিজঙ্গপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান করতে হবে।

২. চট্টগ্রাম বন্দর সহ সকল নৌ-বন্দরে লাইটারেজ জাহাজ সহ অন্যান্য নৌ-যান রাখার পোতাশ্রয় নির্মাণ, ঘাট ইজারাদার এবং ডব্লিউটিসি ছাড়পত্র দেখার নামে বিভিন্ন স্থানে মালিকদের দালাল কর্তৃক শ্রমিকদের হয়রানী-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

৩. উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের চুক্তি ও ভারত প্রোটোকলের নিয়ম অনুযায়ী ভারতগামী জাহাজী শ্রমিকদের লেন্ডিং পাস, পোর্ট ভিসা, দৈনন্দিন বাজার ঘাটের সুব্যবস্থা, অসুস্থ্য শ্রমিকদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপ লাইনে জালানী তৈল সরবরাহের কার্যক্রম পুনরায় বিবেচনা করে ট্যাংকার জাহাজ গুলো নিরাপদে চলাচলের সুযোগ করে দিতে হবে এবং ইনল্যান্ড মাষ্টার, ড্রাইভার, সুকানী, শীপ পরীক্ষায় সকল অনিয়ম ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ করে নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল এ পরীক্ষা সেন্টার ও নৌ-আদালতের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. যাত্রবাহী লঞ্চ শ্রমিকদের গেজেট অনুযায়ী বেতন প্রদান, বিভিন্ন ঘাট ও পাটুনে সরকারি ইন্সপেক্টর ও মালিকদের কর্তৃক জুলুম, হয়রানী ও শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে।

৬. বালু, পাথর, কাঠ, কয়লাবাহী বান্ধহেড, ড্রেজার শ্রমিকদের “ঘ” পরিচ্ছেদ ক্যাটাগরিতে বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে। বান্ধহেড নৌ-শ্রমিক ও দেশীয় ড্রেজার রাত্রিকালীন চলাচলে আরোপিত ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে সকল বাজতে চলাচলের অনুমতি দিতে হবে ও বজ্রপাত, ঝড়, বৃষ্টি, রোদ, কুয়াশা থেকে রক্ষার মা স্টাডিং হাউজে ছাদ আকারে সাপোর্ট এর ব্যবস্থা করতে হবে। বান্ধহেড ট্রলারের কাগজপত্র দেখার নামে বিভিন্ন কিছু অসাধু নৌ-পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের চাঁদাবাজি ও হয় বন্ধ করতে হবে এবং এদের দায়িত্ব আলাদা আলাদা ভাবে বন্টন করতে হবে।

৭. সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ডাকাতি, নৌ চ্যানেলে জাল ফেলে নৌ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, চট্টগ্রাম চরপাড়া ঘাট এর ইজারা বাতিল, বিভিন্ন স্থানে বিআইডব্লিউটি এর বারদিং ইজারার নামে চলন্ত জাহাজ থেকে চাঁদাবাজী শ্রমিকদের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, শুকনো নৌ-পথ ড্রেজিং ও বয়া- বিকন বাতি মার্কা স্থাপন করে নৌ-চলাচল সঠিক রাখতে হবে এবং বৈধ ভাবে বালুমহল ইজারা প্রদান করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা