April 26, 2024, 12:43 am

চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এক ট্রান্সজেন্ডার নারী বিউটি কে যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার মূলহোতা ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদসহ ০৩ জন’কে রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একজন খ্যাতনামা বিউটি বøগার ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটে। উক্ত ভিকটিম একজন প্রতিষ্ঠিত কর্মজীবী। তিনি নিজ যোগ্যতা, অধ্যবসায় ও কর্মদক্ষতায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি দেশের প্রচলিত আইন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশ^াস ও আস্থার জায়গা থেকে স্ব-উদ্যোগে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছেন।

২। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভ‚ক্তভোগী রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৩৫, তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২২। ধারাঃ ১৭০/৩২৩/৩৮৪/৩৪৫/৩০৭/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

৩। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২ এর যৌথ অভিযানে গত রাত ও অদ্য সকালে রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্ণিত ঘটনার মূলহোতা (১) ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক @ সানি(২১), পিতাঃ ছগির আহমেদ খান, চিতলমারী, বাগেরহাট ও অন্যতম সহযোগী যথাক্রমে (২) সাইমা শিকদার নিরা@ আরজে নিরা (২৩), পিতাঃ সেন্টু সিকদার, ডেমরা, ঢাকা (৩) আব্দুল্লাহ আফিফ সাদমান@ রিশু (১৯) পিতাঃ মোঃ আবুল হোসেন, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর’দেরকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত অভিযানে ভিকটিমের ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধারসহ জব্দ করা হয় প্রতারণার কজে ব্যবহৃত অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পিস্তল, মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত ঘটনার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে।

৪। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াক এই চক্রের মূলহোতা এবং গ্রেফতারকৃত আরজে নীরা ও গ্রেফতারকৃত অপর সদস্য সাদমান আফিফ@রিশু তার অন্যতম সহযোগী। গ্রেফতারকৃতরা বিগত প্রায় ০২ বছর যাবত নানাবিধ কৌশলে জিম্মি, বøাকমেইল ও প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী-পুরুষদের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে। তারা সাধারনত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। অতঃপর কৌশলে বিভিন্ন সময়ের আপত্তিকর ছবি/ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের হেনস্থা ও বø্যাকমেইল করে থাকে। বর্ণিত অপকর্মের জন্য তাদের ভাড়াকৃত বাসা ব্যবহার করে থাকে। যেখানে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিওগুলো ধারণ করে বø্যাকমেইল করা হতো। এছাড়া অনলাইনেও ভিকটিমদের ফাঁদে ফেলে থাকে। গ্রেফতারকৃতরা নিজেদেরকে ভ‚য়া সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতো।

৫। গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, কিছুদিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত সাদমান আফিফ@রিশুর পরিচয় হয়। উক্ত পরিচয়ের সূত্রে গত ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে রাজধানীর ভাটারা এলাকার (বসুন্ধরা) একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের নিকটবর্তী একটি রেস্টুরেন্টের সামনে গ্রেফতারকৃত রিশুর সাথে ভিকটিমের সাক্ষাত হয়। অতঃপর সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে ভিকটিমকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াকের ভাড়াকৃত বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অতঃপর গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াক, নিরা ও রিশু জোরপূর্বক ভিকটিমকে মারধর, শ্লীলতাহানী ও যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে। এসময় তারা ভিকটিমরে সাথে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং ১ লক্ষ টাকা দাবী করে। এসময় গ্রেফতারকৃতরা আইন-শৃঙ্খলা ও সামরিক বাহিনীর ভ‚য়া পরিচয় দিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে। অতঃপর ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রামপুরায় নামিয়ে দেয়। গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ২টি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে বিভিন্ন মামলায় সে কারাভোগ করেছে।

৬। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা