February 5, 2025, 10:50 am

খানপুর হাসপাতালে পিস্তল দেখিয়ে টেন্ডার জমা দিতে বাধা

নারায়ণগঞ্জ রিপোর্ট :নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩শ শয্যা বিশিষ্ট (খানপুর) হাসপাতালে পিস্তলের ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি বলে একটি সার্জিক্যাল প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে। গত ২৩ ডিসেম্বর শহরের খানপুর হাসপাতালে এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত টেন্ডার জমা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। পুরো বিষয়টি একটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত একটি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ২৩ ডিসেম্বর সেই টেন্ডার জমা দেওয়ার তারিখ ছিল।

সার্জিক্যাল প্রতিষ্ঠানের এক মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর হাসপাতালে এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত একটি দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সেই দরপত্রের সিডিউল ক্রয় করার জন্য গত ৩০ নভেম্বর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসারের কাছে যাই। সেখানে গেলে তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানান। পরে কোন নেতাকে ডেকে এনে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। তবে আমি তাকে চিনতে পারিনি, নামও মনে নেই। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এমনটি বুঝানোর চেষ্টা করে যে পুরনোদের বাইরে টেন্ডার অন্য কেউ জমা দিতে পারবে না। এসব কথা বলে তিনি আরও জানান সিডিউল কিনতে হলে ডিসি অফিস থেকে কিনতে হবে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল থেকে কেনার সুযোগ রয়েছে। এরপর ফের ডিসি অফিস হয়ে হাসপাতালে যাই। সেখানে হাসপাতালের হিসাব রক্ষক হাসান হাবিব সিডিউল লিখতে গেলে নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। অবশেষে নানা ভোগান্তির পরে সিডিউল কিনি।

তিনি আরও বলেন, ২৩ ডিসেম্বর টেন্ডার জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে হাসপাতালের গেইটে প্রবেশ করি। সেখানে প্রবেশ করতেই হাসপাতালের হিসাব রক্ষক হাসান হাবিবকে দেখতে পাই। তিনি আশেপাশের কয়েকজনের সাথে কথা বলছিলেন। পরে ওই লোকজন আমার কাছে এসে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। এ সময় তারা জ্যাকেটের ভেতরে পিস্তল সাদৃশ্য কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করে। এসব দেখিয়ে তারা বলছিল, আপনি বিপদে পড়ে যাবেন এখান থেকে চলে যান। সেখানে আমার মতো আরও অনেকে ভয়ভীতির কারণে টেন্ডার জমা দিতে পারেনি। পরে জানতে পারি সেখানে একটি সিন্ডিকেট আছে। সেই সিন্ডিকেটের বাইরের লোকজন সেখানে টেন্ডার জমা দিতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, খানপুর হাসপাতালে টেন্ডার জমা দিতে না পেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার জমা দিতে যাই। সেখানে গিয়ে আরও বিপাকে পড়েছি। সেখানে ডিসি অফিসের কার্যালয়ের ভবন থেকে এক লোককে কান্না করতে করতে নিচে নেমে আসতে দেখি। পরে জানতে পারি উপরে একদল লোক ধাক্কা-ধাক্কি করে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাকে টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি। এই চিত্র দেখে আমরাও ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে আসি। এসময় আশেপাশের লোকজনদের কাছে জানতে পারি, এখানে নির্দিষ্ট কিছু লোক ও প্রতিষ্ঠান টেন্ডার জমা দিতে পারে। আর সেই সিন্ডিকেটের লোক হিসেবে খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, হিসাব রক্ষক সহ আরও অনেকে রয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাসার বলেন, এরকম কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নাই। এবার ৪৯টি টেন্ডার জমা পড়েছে। টেন্ডার জমাদানের দিন সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিল। কাউকে ভয়ভীতি দেখানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। কোন ধরনের সিন্ডিকেট এখানে নেই। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

হিসাব রক্ষক হাসান হাবিব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টেন্ডার জমা দিতে আসা অনেক লোকের সাথে তার কথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের লোক হওয়ার সুযোগ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা