October 7, 2024, 8:05 pm

ল্যাব ছাড়াই রোগ নির্ণয়, ফি নিচ্ছে ৫০০ টাকা

হুজুরের কেরামতি!
টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ, সর্বশান্ত হচ্ছেন নারীরা

নারায়ণগঞ্জ। ল্যাবরেটরী নেই , টেকনিশিয়ান নেই তবুও তিনি রোগ নির্ণয় করেন রোগীর। ভিজিটও নে রোগী প্রতি ৫০০ টকা হারে। দৈনিক ২শতাধিক রোগী দেখে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এইচ এম, আব্দুল্লাহ চৌধুরী নামে এক হুজুর। তার কেরামতি দেখে অনেকই হাসছেন এবং তাকে কেউ কেউ ভুয়া আবার কেউ কেউ ভন্ড হুজুর বলে দাবি করেন। তিনি রোগীর বাবা মা ও রোগীর নাম খাতায় লিখে রোগীর রোগ নির্ণয় করেন যা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। নারায়ণগঞ্জ সিটিকরপোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের উত্তর মাদানীনগর ( পূর্ব নিমাই কাশারী) এলাকার ১ নং রোডের বি ব্লকের ১৩ নাম্বার নুরুল ইসলাম সরকারের বাড়ির নিচ তলায় দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এই চিকিৎসা সেবার নামে অপচিকিৎিসার মাধ্যমে দৈনিক লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীদের শেল্টারে এই হুজুর নিরবে এই অপককর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। শরীরে বড় ধরনের রোগ ব্যাধি, পাগল,ভানমারা, নিস্তান, সংসারে অমিল, ব্যবসা বাণিজ্যে অনুন্নতি, স্বামী স্ত্রী অমিল, জি¦নে ধরা ভুতে ধরা.যাদুটোনা,শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় অমনাযোগী, বড় ধরনের নানা রোগব্যাধি নির্নয় করেন। এক্ষেত্রে তিনি রোগীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা হারে ভিজিট নিয়ে থাকেন। রোগ নির্ণয় করার পর রোগীর রোগ নির্মূলের জন্য ওই হুজুর হাকিয়ে থাকেন ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা। কোরআনি আমল দ্বারা তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। তার দাবিকৃত চুক্তি মোতাবেক টাকা পরিশোধ করলেই তিনি চিকিৎসা সেবা করেন থাকেন বলে তিনি দাবি করেন। স¤প্রতি তার চেম্বারে গেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। বোরখা পরিহিত নারীরাই হচ্ছেন মূলত আব্দুল্লাহ চৌধুরীর রোগী। এই আব্দুল­াহ চৌধুরীর খপ্পড়ে পড়ে অনেক নারী সর্বশান্ত হচ্ছেন। ওই হুজুরের চেম্বারে আসা বোরকা পরিহিত নারীরা স্বামী সংসার ও আত্মীয়স্বজনদের মানসম্মানের কথা ভেবে তাদের নাম পরিচয় জানাতে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করে বলেন ,আমাদের পরিচয় প্রকাশ হলে আমাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হবে তবুও কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী তাদের নাম প্রকাশ করেন । মোসাঃ রিজিয়া বেগম, আছমা বেগম, সুলতানা ,জুলেখা বেগম, মোসাঃ বিউটি ও মোঃ আম্বিয়া আক্তার, মোসাঃ সোনালী, রেবেকা, সুরাইয়া বেগম, জেসমিন আক্তার। তারা অভিযোগে জানান আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ হাজার আবার কারো কাছ থেকে ৩০ হাজার এবং ৪০ হাজার এবং ৬০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন ওই হুজুর। তানারীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে রোগ পরীক্ষার নামে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প সাজিয়ে ওই হুজুর রোগীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। নারীরা সহজেই তার কথায় বিশ্বাস করে হাতের সঞ্চয়, এবং স্বর্ণালংকার বিক্রি করে কেউ কেউ দ্বার দেনা করে টাকা এনে হুজুরকে দিয়ে রোগ ব্যাধির চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারাীরা সর্বস্ব খুইয়ে কারো কাছে বলতেও পারছেনার দেওয়া তদবিরে কোন ফল পাননি বলে তারা অভিযোগ করেন । তাই তার কাছে আবারও এসেছি কেন ফল পাইনি তা জানতে। চেম্বারে আসা আরও কয়েকজন নারী তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন এটা হুজুরের প্রতারণা ছাড়া আর কিছুইনা তারও তাদের নাম প্রকাশ না করে টাকা ফেরত নিতে এসেছেন বলে জানান। এইচ এম আব্দুল­াহ চৌধুরীর বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার চেম্বারে গেলে বাড়ির মালিক মেঃ নুরুল ইসলাম সরকারকে ডেকে এনে সাংবদিকদের দিকে উত্তেজিত করে দেন। নুরুল ইসলাম সরকার সংবাদকর্মীদের বলেন আপনারা কারা কেন এসেছেন, সংবাদকর্মী পরিচয় পাওযার পর কার অনুমতি নিয়ে এসেছি তার কৈফিয়ত চান তিনি। তাকে বুঝিয়ে বলার পর তিনি তার স্ত্রীসহ হুজুরের পাশে বসেন। পরবর্তীতে আব্দুল­াহ চৌধুরী নামের ওই হুজুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিভাবে রোগ নির্ণয় করেন এর প্রতিউত্তরে তিনি বলেন, আমাকে দেখাতে হলে ৫০০ টাকা ফি আগেই রিসিভষনে পরিশাধ করে আসতে হয়। খাতা কলমে রোগী ও তার বাবা মায়ের নাম লিখে কোরআনি আমল দ্বারা রোগীর রোগ পরীক্ষা করে জানাই যে রোগীর এই রোগ ধরা পড়েছে । তিনি আরও বলেন, রোগীকে কোন তাবিজ কবচ দেইনা। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটে । তিনি নিজেকে বড় একজন মাওলানা দাবি করেন। অভিযোগ রয়েছে তার কয়েকজ বেতনভুক্ত নারী কর্মী রয়েছে তারাই বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের ফাঁদে ফেলে এখানে নিয়ে আসেন। তবে আব্দুল­াহ চৌধুরী নারী কর্মীর কথা অস্বীকার করে বলেন, কোন প্রতারণামূলক কাজ করিনা। নাারীদের কাছ থেকে। কিভাবে আব্দুল­াহ চৌধুরী রোগ নির্ণয় করে এ বিষয়ে তার সহকারী মোঃ হারেজ বলেন, আমি নতুন এসেছি কিছু জানিনা । তার চিকিৎসা সেবায় কোন রোগী ভাল হয়েছে কিনা এ বিষয়ে আব্দুল­াহ চৌধুরী বলেন, রোগী ভাল হয়েছে তবে তাদের নাম ঠিকানা রাখিনি। এইচ এম আব্দুল­াহ চৌধুরীর এই অপচিকিৎসা ও প্রতারণা সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ সিটিকরপোরেশনের প্যানেল মেয়র ২ ও নারায়ণগঞ্জ ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানার ওসিকে জানান।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবুবর সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে যদি থানায় এসে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মবকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে ভাল করে জেনে মতাত দেব বলে জানান।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা