April 26, 2024, 7:25 am

কেশবপুরে মাহে রমজান ঘিরে পাকা কলার দাম বৃদ্ধিতে সল্প আয়ের ক্রেতারা বিপাকে

শামীম আখতার বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) কেশবপুরে পবিত্র মাহে রমজান ঘিরে পৌরশহর ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে পাকা কলার দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা অর্জনের ধান্দা করে বিভিন্ন জাতের প্রতি কেজি পাকা কলা ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়তি দরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি কলা ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে বিক্রি হতো। দাম বাড়তি হওয়ায় খেটে-খাওয়া সামান্য উপার্যনের ক্রেতারা মনে করছে ব্যবসায়ীরা কলা মজুদ রেখে বাজারে সংকট করে ফয়দা লুটছে। তাদের এহেন কর্মকান্ডের জন্য অনেকেই হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত ২ এপ্রিল (শনিবার) সন্ধা রাতে পৌরশহরের থানার মোড়, মধু সড়ক, স্বর্ণপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা দু’চার দিনে আগের চেয়েও বর্তমানে বেশি দামেই কলা বিক্রি করছে। আবার অনেক কলা বিক্রেতাকে খাবার অনুপযোগী কলা বিক্রি করতেও দেখা যায়।

সপ্তাহ খানেক আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতেন সাগর কলা প্রতি কেজি ২৫ টাকা, চাঁপাকলা ৪০ টাকা, সবরি কলা ৪৫ টাকা, কালিভোগ ও দুধসাগর কলা ৫০ টাকা।
বর্তমানে খুচরা কেজি প্রতি সাগর কলা ৪০ টাকা, চাপাকলা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, সবরি কলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কালিভোগ ও দুধসাগর কলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

থানার মোড়ে কলা ক্রেতা উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব বলেন, মাহে রমজানকে ঘিরে কলার দাম বৃদ্ধি করেছে ব্যবসায়ীরা। আগে যে সাগরকলা ২৫ টাকা কিনতাম সেই কলা এখন প্রায় দ্বিগুন দামে কিনতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় পরিমাণে কম কিনেছি।
উপজেলার বাগদা গ্রামের কলা ক্রেতা গৃহিনী লতিকা বেগম এর কাছে জানতে চাইলে তিনিও একই কথা বলেন।
বাজারে কলা কিনতে আসা অধিকাংশ ক্রেতা দাম বৃদ্ধির কারণে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অসাধু পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাহে রমজানকে পুঁজি করে অধিক লাভের জন্য দাম বৃদ্ধি করেছে। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করার দাবী করেছেন তারা।

থানার মোড় এলাকার খুচরা কলা ব্যাবসায়ী আলতাপোল গ্রামের শওকত আলী বলেন, কলা আমদানি কম হওয়ার কারণে কলার দাম বৃদ্ধি হয়েছে। আমি যেমন বেশি দামে ক্রয় করেছি সেজন্য বেশি দামেই বিক্রি করছি।
মধুসড়কের ব্যবসায়ী আলতাপোল গ্রামের আবু সাঈদ একই সুরে কথা বলেন।

স্বর্ণপট্টি এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মধ্যকুল গ্রামের উত্তম দেবনাথ বলেন, পাইকারি বিক্রেতা রমজান উপলক্ষে আগের চেয়ে প্রতি কেজি কলার দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা দর বাড়িয়ে বিক্রি করছে। আমার কি আর কোন উপায় আছে।

কলার দাম বৃদ্ধিতে স্বর্ণপট্টি এলাকার আর এক খুচরা ব্যাবসায়ী খতিয়াখালি গ্রামের ইমন হোসেন বলেন, মাহে রমজানকে ঘিরে পাইকারি বিক্রেতা বেশি দামেই বিক্রি করছে। যেমন বেশি দামে কিনছি, তেমনি বেশি দামেই বিক্রি করছি।

কেশবপুর পৌরশহরের পাইকারী আড়ৎদার ব্যবসায়ী মোজাম বিশ্বাস কাছে কলার দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোজার কারণে কলার দাম বাড়েনি। মাহে রমজান মাসে বাজারে কলার চাহিদা তুলনামূলক অনেক বেশি। সেই তুলনায় সরবরাহ কমের কারণে দাম বাড়তি। এ বছর কলার চাষ অনেকটা কম হওয়ায় মহাজনদের কাছ থেকে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে কলার দাম স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সরবরাহ বেশি হলে কিছুটা কমতে পারে।

এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, যদি কেউ দ্রব্যমূলের দাম বৃদ্ধি করে এবং অপরাধ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা