April 26, 2024, 5:35 pm

গোবিন্দগঞ্জে যত্ন ভাতা, পকেট ভারী দালাল ও সুবিধাভোগী ভিআইপিদের

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি :গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যত্ন ভাতা প্রকল্পে পকেট ভারী করেছে ইউনিয়ন পর্যায়ের দালাল আর ভিআইপ সুবিধাভোগীরা। পুরাতন ও নতুন তালিকার কাজেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার হরিরামপুর, নাকাই, রাখালবুরুজ, কামারদহ, দরবস্তসহ প্রায় সব ইউনিয়নের যত্ন ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন প্রভাবশালী ও আত্মনির্ভরশীল পরিবারগুলো। সুবিধাভোগীদের বাড়ির পাশেই অস্বচ্ছল, গরীব ও পুষ্টি চাহিদা মেটানোর মতো সামর্থহীন পরিবারগুলো বাদ পড়েছে।

এ বিষয়ে কয়েকজন জানান, আমরা স্থানীয় দালালদের টাকা দিতে না পারায় আমাদের নাম দেয়া হয়নি। যাদের সবই আছে, টাকা ঘুষ দেয়ার সামর্থ আছে তারাই এ ভাতা কার্ড পেয়েছে।

অনেক জায়গায় খোদ চাকরিজীবীরা তাদের সন্তানের জন্য ভাতা পাচ্ছেন। কোথাও তৃতীয় সন্তানের নামে টাকা উঠাচ্ছেন। কোনো কোনো ইউনিয়নে নতুন করে এ তালিকায় নাম উঠাতে স্থানীয় সুপারভাইজাররা ৪ হাজার করে টাকাও নিচ্ছেন।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে হরিরামপুর ইউনিয়নের তালিকায় ৮০০৪৮ নম্বর তালিকায় মো. শফিক প্রধান, স্ত্রীর নাম কোহিনুর খাতুন এবং তানভির হোসেন মাহমুদ এর নামে অভিযোগ উঠেছে। এখানে খোদ কোহিনুর বেগম স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরিরত। বিষয়টিতে মোবাইলে কথা বললে তার স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী কোন চাকরি করে না। পরবর্তীতে গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে খোঁজ নিলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।

অপরদিকে কামারদহ ইউনিয়নের নতুন তালিকা নাম উঠানোর জন্য করে একাধিক ব্যক্তির কাছে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তালিকায় নাম ঢোকানোর জন্য পরিদর্শন করে সুপারভাইজাররা ওই সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এ ইউনিয়নে ভাগগোপাল-সতিতলা গ্রামের মৃত বদিউজ্জামানের পুত্র নূর আলম, রফিকুল সরকারের ছেলে আল আমিন, মৃত মেজ্জাদুল মণ্ডলের ছেলে ময়নুল মণ্ডল, হাবিজার মণ্ডলের ছেলে এরশাদুল মণ্ডল, বিপুল সরকার, মোস্তফা শেখ, আশিনুর রহমানদের পরিবারকে এই ভাতাকার্ডের অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা চলছে।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, আশিনুর রহমান তার স্বামী ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করেন। মোস্তফা শেখ যিনি ৮ বিঘা জমির মালিক ও এনজিও কর্মী, বিপুল সরকার যিনি ৯ বিঘা জমির মালিক ও মসজিদের মোয়াজ্জিন। নূর আলম যার রয়েছে ৮ বিঘা জমি ও গরুর খামার, আল আমিন গার্মেন্টস কর্মী এবং মাসে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন। হারুন অর রশিদ নাইচ যিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী। মিলন শেখ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন। শিপন শেখ যার বাৎসরিক আয় ১০ লাখ টাকা। এমন পরিবারের সন্তানদের নামে এখানকার সুপারভাইজার সুপারিশ করে ভাতা কার্ড পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

উপজেলার ছিন্নমূল, দুঃস্থ-গরীব অসহায় পরিবারের সন্তানদের পুষ্টিমান চাহিদা পূরণের ভাতা কার্ডগুলো এভাবে ভিআইপিরা গ্রহণ করাকে অন্যায়-অবিচার বলে দাবি করেন এলাকাবাসী ও অভিযোগকারীরা। তাদের দাবি প্রকৃত পরিবারগুলো এই সুবিধার আওতায় আসুক। আর ওইসব চাকরিজীবী ও ভিআইপিদের নামগুলো কেটে নতুন করে নাম দেয়া হোক।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা