শামীম আখতার (নিজস্ব প্রতিবেদক) ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চপ্পুর পদত্যাগ এবং ছাত্র-জনতার ৫ দফা দাবি আদায়ের দাবিতে কেশবপুরে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ত্রিমোহিনী মোড়ে সমাবেশ করেন। পরে সেখান থেকে পুনরায় মিছিল নিয়ে উপজেলা পাবলিক ময়দানে গিয়ে গণজমায়েত ও সমাবেশ শেষ করেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি সম্রাট হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৬টি বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে। সেই আওয়ামী লীগের নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চপ্পু তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন অনেক আগেই। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর তাই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে হবে। দেশে বিপ্লবী সরকার গঠন করে অবশ্যই সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আহবান করেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের সংবিধান অবশ্যই সংস্কার করতে হবে, যে সংবিধানের দোহাই দিয়ে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের স্বৈরতন্ত্র চলেছে। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে শতশত ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। আবারও ছাত্র-জনতা শহীদ হতে রাজি আছে, তবুও আওয়ামী লীগের দোসর রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিনের কোন ভাবেই দায়িত্বে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, গত ৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি মিডিয়াতে এসে সরকারের পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কিন্তু এখন তিনি কেন বলছে সরকার পদত্যাগপত্র জমা দেননি।বর্তমান ছাত্র-জনতার একটাই দাবি ফ্যাসিবাদীর দোসর মিথ্যাবাদী রাষ্ট্রপতির অপসারণ করাসহ ছাত্র জনতার ৫ দফা দাবি পূরণ করতে হবে। তা-না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সদস্য সোহাগী তাঁর বক্তব্যে বলেন, গত ৫ জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার রক্ত এখনো রাজপথ থেকে শুকায়নি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে দূর করতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী জীবন দিতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার খুনী হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তারপরেও সেই ফ্যাসিবাদীর দোসর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন কিভাবে এদেশে অবস্থান করছে। আরও বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী শাহেদ, মামুন, মুনিব, আনোয়ার, কামরুল, মাহিম, ইব্রাহীম, ইমন, শাওন, পায়েল, আফরিন, সাদিয়া, প্রেমা প্রমূখ।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীরা বক্তব্যের পাশাপাশি তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো:-১. মুজিববাদী সংবিধান অর্থ্যাৎ ‘৭২ এর সংবিধান বাতিল করে দিয়ে, নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে।
২. এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৩. ফ্যাসিবাদী সংবিধানের রাষ্ট্রপতি চুন্নুকে এই সপ্তাহের মধ্যে পদচ্যুত করতে হবে।
৪. অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মানে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে proclamation of Republic জারি করতে হবে। সেটির ভিত্তিতে এবং সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।
৫. বিগত তিনটি (২০১৪, ২০১৮, ২০২৪) নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে।