মনিরুল ইসলাম মনির :এ বছর মতলব উত্তরে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড বা উচ্চ ফলনশীল ভুট্টার ব্যাপকভাবে আবাদ করা হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক মুনাফা এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষক। তবে এবার ভালো দাম না পাওয়ায় চাষির মুখ হাসি নেই।
উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নেই ভুট্টার আবাদ হয়েছে। বর্তমানে কৃষক ভুট্টা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে এখলাছপুর, ফরাজীকান্দি, সুলতানাবাদ, দূর্গাপুর, জহিরাবাদ’সহ এলাকায় ব্যাপক ভুট্টার আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাছে ঝুলছে হলুদ রঙের ভুট্টার মোচা। ইতোমধ্যে চলছে মোচা কেটে নেওয়ার কাজ। কৃষক মাঠ থেকে ভুট্টা কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বা সেগুলো মাড়াইয়ের কাজ করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লাভজনক হওয়ায় কয়েক বছর ধরে ধান-আলু আবাদ বন্ধ রেখে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর আবাদ। এবার এ উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ২৯০ হেক্টর জমি হলেও শেষ পর্যন্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ হেক্টরে। আর উৎপাদন লক্ষ্য ২০ হাজার ৫০০ টন। সরকার ভুট্টা আবাদে আগ্রহ সৃষ্টি করতে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার দিয়েছে। রোগবালাই এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ।
উপজেলার দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ১০০ শতক জায়গায় ধানের পরিবর্তে প্রথম ভুট্টা আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলেও এবার দাম অনেক কম। পাইকাররা ৮০০ টাকা মণ দাম করেছে। কম দাম হওয়ায় ভুট্টা বাড়িতেই রেখে দিয়েছেন। পরে দাম বাড়লে বিক্রি করবো।
ইউনিয়নের চরজহিরাবাদ গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম জানান, তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬৫ মণের ওপরে ভুট্টা তুলেছেন। রোদে শুকানোর পর মণ প্রতি ৯০০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেছেন। অথচ গত বছর বিক্রি করেছিলেন এক হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে।
সহকারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষাবাদ বেড়েছে। কৃষকদের মধ্যে সরকারিভাবে উন্নতমানের ভুট্টার বীজ ও সার বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। এ মৌসুমে ২ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে।
তিনি জানান, এ অঞ্চলে যুবরাজ, এন এইচ, এন কে ৭৮৮৪, পাইওনিয়ার, প্যাসিফিক, সানসাইন, মিরাকেল, জাতের ভুট্টা বেশি চাষ হয়েছে।