,সিদ্ধিরগঞ্জ (১৪’ ফেব্রুয়ারী ২৩’ইং মঙ্গলবার) ঃ সিদ্ধিরগঞ্জে থানা ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার চেষ্টা মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার ও জেল খাটা আসামী যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন ওরফে কানা আনার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলা। যাকে নারায়নগঞ্জ ডিবি পুলিশ নাশকতা মামলায় ২’দিন আগেও আরামবাগ এলাকায় খুজে গেছে। সেই আনোয়ার ওরফে কানা আনোয়ার ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে নারায়নগঞ্জে গাড়ী পোড়ানো, নামকতার মামলা থাকার পরও বর্তমানে আবারো আ.লীগ সরকার ও পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। এই নির্বাচনের বছরে বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের সাথে গোপন মিটিং করছে বলে অভিযোগ করছেন। ইতিমধ্যে গোদনাইলের চৌধুরীবাড়ী এলাকায় একটি চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে বিএনপি নেতাদের গোপন মিটিং এর সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ৫জনকে গ্রেফতার করে। আরো ৩/৪জনকে ছেড়ে দেয়। অভিযোগ রয়েছে সেই নাশকতার গোপন মিটিং এ যুবদর নেতা ও সোর্স আনোয়ারও ছিলো। কিন্তু কোন এক শক্তির বলে সে রেহায় পেয়ে যায়। এদিকে কানা আনোয়ার বেপরোয়া এ সংক্রান্ত সংবাদ নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন গন মাধ্যমে প্রকাশের পরও তার বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছেনা। সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই সাধারন মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে, নাশকতা মামলার আসামী, যুবদল নেতা কানা আনারের খুটির জোর কোথায়?
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বেশ কয়েকদিন জেল খেটে বের হয়ে আতœগোপনে চলে যান। বর্তমানে ফের এলাকায় এসে আবারও বেপরোয়া দিনযাপন করছেন। তৈরি করেছেন বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী। তার এই বাহিনীতে রয়েছেন একাধিক চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী। যার শেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন যুবদল নেতা ও মাদকসেবী আনোয়ার ওরফে কানা আনোয়ার। আনোয়ার ও তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আরামবাগের সাধারণ মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার স্থানীয় এক দোকানী বলেন, আনোয়ার আমাদের আরামবাগের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তার শেল্টারে আরামবাগে চলছে একাধিক মাদকের স্পট। যার নিয়ন্ত্রণ করেন আনোয়ার। তবে পুলিশের সাথে তার ভালো সখ্যতা রয়েছে বলে জানান তিনি। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকিও দেন। নিজেকে পুলিশের আত্বীয় দাবি করেন আনোয়ার। আনোয়ারকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১০নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক আনোয়ার। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন এই আনোয়ার। সে সময় থেকেই প্রশাসনের সোর্স হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। বেপরোয়া জীবন যাপন ছিলো তার। তখন তার বিস্তার ছিলো বন্দর দেওলী, চৌড়াপাড়া. লক্ষনখোলা এলাকায়। চিত্তরঞ্জন ঘাট দিয়ে সহজেই সেই এলাকায় গিয়ে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন আর মারামারি করাই ছিলো তার পেশা। সে ছিলো সেই এলাকার টপ সন্ত্রাসী হক গ্রুপের অন্যতম সদস্য। যার ফলে একাধিকবার স্থানীয় দৈনিগুলোতে শিরোনাম হতে দেখা গেছে এই আনোয়ারকে। আ.লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কখনো নিজেকে আ.লীগের সহযোগী আবার কখনো সাংবাদিক আবার কখনো র্যাব পুলিশের সোর্স সেজে মানুষকে হয়রানী শুরু করে। পরবর্তীতে তার দ্বারা অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন মানুষ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। এরফলে কানা আনোয়ার হয়ে যায় আ.লীগের নেতাকর্মীদের চরম বিদ্বেষী। শুরু করে আ.লীগ সরকার ও স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আ.লীগের মিছিলেও সে হামলা চালায়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাসিক ১০নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা পর যুবদল নেতা ও র্যাব পুলিশের সোর্স আনোয়ার হোসেন ওরফে কানা আনোয়ারকে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে গোদনাইল বউ বাজার আনোয়ারা ফ্যাশনের সামনে থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই জসিম আনোয়ারকে গ্রেফতার করে। সেদিন গোদনাইলবাসী একাধিক মামলার আসামী আনোয়ার গ্রেফতারে পুলিশকে সাধুবাদ জানান। গ্রেফতারের পর আনোয়ারের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকরে সাথেও সে অশালীন আচরন করেন বলে উপস্থিত সাংবাদিক জানান। থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬জুন শুক্রবার সিদ্ধিরগঞ্জে বর্তমান সরকারের সফলতা তুলে ধরে নৌকার পক্ষে মিছিল শেষে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব শত্রুকার জের ধরে ছাত্রলীগ নেতা টুটুল ও শীতলের উপর হামলা চালায় কানা আনোয়ার বাহিনী। হামলায় টুটুল, শীতলসহ ৪/৫জন আহত হয়। ঐ মামলায় আনোয়ারকে দ্বিতীয় আসামী করা হয়। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারায় নারায়নগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডি: ম্যাজি: আমলী (ক) আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা (মামলা নং-১৫৯/১৮) দায়ের করা হয়। না’গঞ্জ শহরে বিএনপি’র মিছিল থেকে গাড়ীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার মামলায় তার নাম রয়েছে। সেই মামলায় সে কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন বলে জানান কয়েকজন যুবদল নেতা। এদিকে আরও জানা যায়, যুবলীগ নেতা ও বিশিস্ট ব্যবসায়ী আমিরের নামে মিথ্যা অপবাদ এবং হুমকি দেয়ার ঘটনায় কাজী আমির সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আনোয়ারের বিরুদ্ধে একটি জিডি দায়ের করেছেন। যার নাম্বার ৯৭৮। জিডি সূত্রে জানা যায়, গোদনাইল আরামবাগ এলাকার মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে আনোয়ার ওরফে বহুরুপী কানা আনোয়ার যুবলীগ নেতা কাজী আমিরের বাসায় কোয়ারটেকারের কাজ করতেন। পরবর্তীতে টাকা পয়সা আত্মসাতসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে যায় এই আনোয়ার। ২০১৭ সালে আনোয়ার কাজী আমিরের বাড়ির কেয়ার টেকার থাকাকালীন ইয়াবা সেবন করেন। ইয়াবাসেবনসহ নানা অপকর্মের কারনে যুবলীগ নেতা কাজী আমির তার কেয়ার টেকার কানা আনোয়ারকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এরপর থেকেই কাজী আমিরের সাথে তার বিরোধীতা শুরু হয় বলে জানা গেছে। সরকারী রেলওয়ের সম্পত্তি দখল থেকে শুরু করে, মাদক ব্যবসায়ীদের সেল্টারদাতা, সন্ত্রাসীদের সাথে সক্ষ্যতাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে কানা আনোয়ারের বিরুদ্ধে।
বর্তমানে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগ সরকার দল ক্ষমতায় থাকলেও একজন মাদকসেবী ও যুবদল নেতার এই ধরনের সাহস দেখে স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। এ জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে জানতে আনোয়ারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, আমাদের পুলিশের কোন সোর্স নেই। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপরাধ করেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কেউ যদি অভিযোগ দেয় তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।##