October 4, 2024, 2:54 pm

কেশবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষকের মৃত্যু: হামলাকারী পিটিএফ এর চেয়ারম্যান আজাদ ইকতিয়ার গ্রেফতার

শামীম আখতার, বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) যশোরের কেশবপুর জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ প্যারামেডিকেল এন্ড টেকনোলজি ফাউন্ডেশন (পিটিএফ) এর চেয়ারম্যান এ.কে.আজাদ ইকতিয়ার (৫০) ও তার ছেলে মুশফিক আজাদ প্রান্ত (২৫) সহ হামলাকারীদের অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হওয়ায় মুনসুর আলী শেখ (৬৫) নামের এক কৃষকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে মৃত্যু হয়েছে। নিহত পৌরসভার আলতাপোল গ্রামের মৃত গোলাপ শেখের ছেলে। তবে, হামলার ঘটনাটি ঘটে ওইদিন সকালে পৌরসভার আলতাপোল গ্রামে। ঘটনা উল্লেখ করে নিহতের পরিবার থানায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নং-৩। তাৎক্ষনিক থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হামলাকারী এ.কে.আজাদ ইকতিয়ার (৫০) কে গ্রেফতার করেন।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর পৌরসভার আলতাপোল গ্রামের মৃত গোলাম শেখের ছেলে মুনসুর আলী শেখ (৬৫) এর পৈত্রিক বসতবাড়ির জমি নিয়ে একই গ্রামের প্যারামেডিকেল এন্ড টেকনোলজি ফাউন্ডেশন (পিটিএফ) এর চেয়ারম্যান এ.কে.আজাদ ইকতিয়ার (৫০) এর সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের জের ধরে ১১ ফেব্রুয়ারী সকালে জমি দখল নেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মুনসুর আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ও হাতে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত এবং লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মরাপিট করে জখম করে। পরবর্তীতে তাদের বসত ঘরে অনাধিকারভাবে প্রবেশ করে টেলিভিশন ও আসবাপত্র ভাংচুর করে প্রায় ১’লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। ওই সময় তাদের পরিবারের লোকজনের ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে ইকতিয়ার ও তার ছেলে প্রান্ত সহ হামলাকারীরা খুন-জখমের হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মুনসুর আলীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেল ৫:০০ ঘটিকার সময় মুনসুর আলী মারা যায়। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মামলার পর কেশবপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জয় ব্যনার্জী, তৌহিদুর রহমান ও আবুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হামলাকারী এ.কে আজাদ ইকতিয়ারকে পৌর শহরের টিএনটি মোড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।

জমি সংক্রান্ত বিরোধে নিহত মুনসুর আলীর মেয়ে ফতেমা বেগম এর জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে জমি দখল করতে গিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যেই আমার বাপের উপর হামলা চালিয়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। আমার আব্বা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে, আর কখনো ফিরে আসবে না। আমার আব্বা খুবই ভালো মানুষ ছিলো, কারো সাথে কখনো ঝগড়াঝাটি করতো না। পিতা হারানোর শোকে ও অশ্রু ঝরা নয়নে প্রশাসনের কাছে এমন নৃশংস হত্যার সঠিক বিচার দাবী জানিয়েছেন তিনি।

এব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মফিজুর রহমান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে হামলায় আহত মুনসুর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। হামলাকারী আসামি প্যারামেডিকেল এন্ড টেকনোলজি ফাউন্ডেশন (পিটিএফ) এর চেয়ারম্যান এ.কে.আজাদ ইকতিয়ারকে গ্রেফতার পূর্বক রবিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা