শামীম আখতার, বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) যশোর জেলার ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে চেতনা নাশক ঔষধ দিয়ে গৃহ চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার এবং চোরাইকৃত ৭ ভরি ৩ আনা স্বর্ণালংকার, ৭ ভরি রুপার অলংকার ও নগদ ৩৩’হাজার ৫’শত টাকা উদ্ধার করেছে। গত ১৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকাল থেকে ১৯অক্টোবর (বুধবার) ভোর পর্যন্ত যশোর, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা, ঝিকরগাছা থেকে চোর চক্রকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, যশোর অভয়নগর থানার বাগুটিয়া গ্রামের মোঃ মাসুদ মোল্লার ছেলে মোঃ তরিকুল ইসলাম (২২) বর্তমানে কেশবপুর পৌরসভার সাবদিয়া গ্রামের তাসলিমার বাসার ভাড়াটিয়া, যশোর কোতোয়ালি থানার বিরামপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মোঃ খোরশেদ আলম এর ছেলে
আব্দুস সালাম বিষু (৩০), লালমনিরহাট জেলার সদর থানার দালালপাড়া গ্রামের মোঃ বকস এর ছেলে মোঃ আলম শরিফ হরফে গোপাল (৩৯), বর্তমানে যশোর মুড়লীর জোড়া মন্দির রোডে রজব আলীর বাসার ভাড়াটিয়া, যশোরের ঝিকরগাছা থানার রাজা ডুমুরিয়া গ্রামের শাহাজাহান কবিরের ছেলে জাহিদ হাসান জনি (২২) ও মনিরামপুর থানার তাহেরপুর গ্রামের সাধন চক্রবর্তীর ছেলে সুন্দরী জুয়েলার্সের মালিক সুমন কুমার চক্রবর্তী (৩৫)।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ১জুন দিবাগত রাতে কেশবপুর উপজেলার দোরমুটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খতিয়াখালী গ্রামের পবিত্র কুমার গোলদার এর বাড়ীর জানালার গ্রীল কেটে গৃহের ভিতর প্রবেশ করে ৯ ভরি ১১ আনা স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা চোরেরা। এ ঘটনা উল্লেখ করে পবিত্র কুমার গোলদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে ৫ জুন কেশবপুর থানায় একটি মামলা করেন। থানার মামলা নং-০৩।
কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা, ঝিকরগাছা থানা এলাকায় একই রূপ ঘটনার অভিযোগ পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মামলাটি তদন্তের জন্য গত ১২ অক্টোবর জেলা গোয়েন্দা শাখার উপর তদন্তভার ন্যাস্ত করেন।
পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি’র) ওসি রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর নির্দেশে এস আই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চোর চক্রকে সনাক্ত করে এস আই আমিরুল, আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ একটি চৌকশ টিম গত ১৮ অক্টোবর বিকাল থেকে ১৯ অক্টোবর ভোর পর্যন্ত যশোর কোতয়ালী, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা, ঝিকরগাছা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোর চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেন এবং তাদের হেফাজত থেকে চেতনা নাশক ঔষধ সহ হলুদের গুড়া জব্দ করেন।
পরবর্তীতে তাদের স্বীকারোক্তিতে মনিরামপুর স্বর্ণপট্টিতে অভিযান পরিচালনা করে সুন্দরী জুয়েলার্স দোকানের মালিক সুমন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেন। ওইসময় তার স্বীকারোক্তিতে ৭ ভরি ৩ আনা স্বর্ণালংকার, ৭ ভরি রুপার অলংকার, স্বর্ণ-রূপা গলানোর গ্যাসকিট এবং নগদ ৩৩’হাজার ৫’শত টাকা উদ্ধার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আসামিরা পেশাদার আন্তঃজেলা সঙ্ঘবদ্ধ গৃহ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরি মামলা তদন্তাধীন এবং বিচারাধীন রয়েছে। তারা পরস্পর যোগসাজশে হলুদের গুড়ার মধ্যে চেতনা নাশক উপরোক্ত ঔষধের গুড়া মিশিয়ে বসতবাড়ীর রান্না ঘরে থাকা হলুদের কৌটার মধ্যে কৌশলে চেতনা নাশক ঔষধ মিশানো হলুদের গুড়া রেখে দিয়ে আসে এবং পরের দিন অচেতন ও বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন হলে তারা চুরি সংঘটন করে থাকে মর্মে তথ্য প্রমান পাওয়া যায়। আসামীরা কেশবপুর, মনিরামপুর, ঝিকরগাছা ও শার্শা এলাকার বিভিন্ন বাড়ীতে চুরি সংঘটন করেছে বলে মর্মে সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায়।
যশোর জেলা পুলিশ বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।