,সিদ্ধিরগঞ্জ (২১’জুলাই ২২’ইং রোববার) ঃ সিদ্ধিরগঞ্জে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সস্টিটিউট’র ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে। তাকে অন্যত্র বদলী করা হলেও তিনি প্রতিষ্ঠান ছাড়তে নারাজ। অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্থি তোলে ধরে ৩’জন শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করলেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি রহিম মার্কেট এলাকায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড স্বীকৃত সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সস্টিটিউটে ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক যোগদান করেন ২০১৫ সালের ১’সেপ্টেম্বর। পরে ২০১৯ সালের ১৭’অক্টোবর তাকে পিরোজপুর জেলার টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সস্টিটিউটে বদলী করা হয়। বদলীর আদেশ জারির ২ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করা বিধিসম্মত নহে এবং সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী হওয়ায় কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, বস্ত্র-১’অধিশাখার উপসিচব মো: মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত আরেকটি স্বারকে ২১’জুন কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু ছামিদুল হক নোটিশের জবাব না দিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাছাড়া অডিডে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাজেট সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও ব্যয় মুঞ্জুরী প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে ক্রয় না করেই বইপত্র ও সাময়িকী ক্রয় বাবদ ২৯’লাখ ৯৮’হাজার ৩৮০’টাকা ব্যয় দেখানোর সত্যতা পেয়ে চলতি বছরের ১১’মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন রিপোর্ট সেক্টরের উপপরিচালক নিতাই কুমার বিশ্বাস।
প্রতিষ্ঠানটির টেকনিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট শারমিন নাহার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন, সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক ও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মো: হাসান ইমাম মিলে তার জিপিএফ ফান্ডের হিসাব নম্বর থেকে জালিয়াতি করে ২’লাখ ৮২’হাজার টাকা আতœসাত করে। একই ভাবে ৯’লাখ ৯৮’হাজার চারশত টাকা আতœসাত করেন সহকারি শিক্ষক (ভাষা) মোহাম্মদ খলিল মিয়ার। এছাড়াও শিক্ষক আবুল হোসেনের ৭’লাখ, মুক্তার হোসেনের ৪’লাখ, আতিয়ার রহমানের ২’লাখ ১০’ হাজার, সোহেল রানার ২’লাখ ৪০’হাজার ও নূরনাহারের ৫’লাখ দুাই হাজারসহ প্রায় ৩৫’লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এসব অভিযোগ উঠার পর নিজেকে রক্ষা করতে গত একমাস আগে সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক বাদী হয়ে হিসাব রক্ষক মো: হাসান ইমামের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অর্থ অতœসাতের মামলা করেন। বর্তমানে হাসান ইমাম পলাতক রয়েছেন। গত সপ্তাহে শিক্ষকদের জিপিএফ ফান্ডের ২০’লাখ ৯০’হাজার টাকা পেলেও সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক(ডিডিও)’র একাউন্টে ১৫’লাখ ৪১’হাজার টাকা জমা থাকলেও তিনি এখনো ফিরিয়ে দিচ্ছে না বলে জানান ভোক্তভূগীরা।
অপরদিকে মো: মহিউদ্দিন নামে একজন অভিভাবক চলতি বছরের ২৬’জুলাই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হকসহ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি ফ্রি থাকলে ভুয়া রশিদে জনপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে নেয়া হয়। ফরম ফিলাম সরকারি ফি থেকে তিনগুন বেশি নেওয়া হয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট, নম্বর ও প্রশংসাপত্র নিতে ফি না থাকলেও যার কাছ থেকে যা পারছে আদায় করা হচ্ছে। সরকারিভাবে প্রাইভেট ও কোচিং ফি না থাকলেও জনপ্রতি এক হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত বিভিন্ন মালামাল ক্রয় না করেও ক্রয় দেখিয়ে অর্থ আত্তসাত করা হয়েছে। অফিস চলাকালীন সময়ে সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক অফিসে থাকেন না। নারী নির্যাতনের একাধিক অভিযোগে সুপারিনটেন্ড এর বিচার হয়েছে। সরকারি কোন অনুষ্ঠান না করেও বিল ভাউচার করে অর্থ আতœসাত করেন। এছাড়াও তোলে ধরা হয়েছে নানা অনিয়ম দুর্নীতি।
প্রতিষ্ঠানটির সুপারিনটেন্ড ছামিদুল হক তার বিরুদ্ধে করা সকল অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আতœসাতের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বলেন, শিক্ষকদের জিপিএফ ফান্ডের টাকা আতœসাত করেছে হিসাব রক্ষক মো: হাসান ইমাম। আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তিনি এখন পলাতক। তবে বদলী আদেশের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাতিলের আবেদন করেছি। এখনো কোন সুরাহা হয়নি।#####