October 8, 2024, 7:21 pm

কেশবপুরে ভুল চিকিৎসা প্রসুতি মায়ের মৃত্যু

শামীম আখতার, বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশনের পর সিমা খাতুন (২৪) নামের এক প্রসুতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। রোগীর স্বজনদের দাবি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ক্লিনিকটি দীর্ঘসময় অবরোধ করে রাখেন। পরবর্তীতে কেশবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। ৫ ই আগষ্ট (শুক্রবার) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে সিজারিয়ান অপারেশনে মায়ের মৃত্যু হলেও নবজাতক জীবিত আছেন। নিহত নারী মঙ্গলকোট গ্রামের শহিদুল্লাহর স্ত্রী।

পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সিমা খাতুন (২৪) এর সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য কেশবপুর সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। রোগীর পরিবার ডাঃ আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন এবং এ্যানেস্থেসিয়া (অজ্ঞান) এর জন্য ডাঃ অজ্ঞলী রায়কে দিয়ে করবে হবে বলে জানান। তাদের কথামতো ক্লিনিক মালিক আজিজুর রহমান ১০’হাজার টাকা এবং রোগীর ঔষধ পরিবারের কিনতে হবে বলে চুক্তি করে নেন। পরবর্তীতে সেই চুক্তি মোতাবেক রোগীকে সিজারের জন্য বিকেল ৫:৩০ ঘটিকায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সিমা খাতুনের একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়। শিশুটি সুস্থ্য থাকলেও ডাক্তারের ভুল অস্ত্রপচার করার কারণে সিমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবারের লোকজন জোর দাবি জানান এবং প্রসুতির মৃত্যুর খবরে রুগীর স্বজনরা তাৎক্ষণিক ক্লিনিকে অবস্থান নেয়।
স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে এবং শতশত মানুষ ভীড় জমাতে শুরু করে। তাদের দাবি ভুয়া ডাক্তার দিয়ে আমাদের রোগীকে অপারেশন করার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার জন্য ভুয়া ডাক্তার ও অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শতশত মানুষ ক্লিনিকে অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই সময় ডাক্তার ও ক্লিনিক কতৃপক্ষ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে কেশবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরবর্তীতে নিহতের বাপের বাড়ি বাউশলা গ্রামের লোকজন একজন জনপ্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে এসে ক্লিনিকের সজিব মল্লিক নামের আরেক ডাক্তার দ্বারা তড়িঘড়ি করে মৃত রোগীর ছাড়পত্র নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যোগে চলে যান।

এ ব্যাপারে ক্লিনিকের মালিক আজিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন খুলনা মেডিকেল কলেজের ডাঃ আবুল কালাম আজাদ করেছেন এবং এ্যানেস্থেসিয়া ডাঃ অঞ্জলি রায় দ্বারা অজ্ঞান করা হয়। রোগীর প্রেসার কমে যাওয়ার কারণে সিমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে।

রোগীর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাঃ আবুল কালাম আজাদ এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেন না। পরবর্তীতে আজ ৬ আগস্ট (শনিবার) দুপুরে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি সিমাকে অপারেশন করছে এবং অপারেশনের এক ঘন্টা পর ক্লিনিক থেকে চলে আসার কথা স্বীকার করেছেন। সেখানে অজ্ঞান ডাঃ অঞ্জলি রায় ছিলেন। এরপর ক্লিনিক কতৃপক্ষ রাত ৮ টার দিকে জানান রোগীর খারাপের অবস্থা। তবে কি কারণে রোগী মারা গেছে সেটা আমি বলতে পারছিনা।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা