সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :সিদ্ধিরগঞ্জে যুবলীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে পাল্টা মার খেয়েছে তাঁতী লীগ নেতাকর্মীরা। পাল্টা পাল্টি সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৮ জন আহত হয়েছেন। ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে দুইটি দলীয় কার্যালয়। আদমজী ইপিজেডের ভিতরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ নিয়ে বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সুমিলপাড়া এলাকায় তিন দফা এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যদের নারায়ণগঞ্জ খানপুর এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
আদমজী ইপিজেডের ঠিকাদার হিরা জানায়, চার্মিন নামে একটি নির্মাণাধিন গার্মেন্টস কারখানায় ইট,বালু সরবরাহ, রং ও টাইলস বসানোর কাজ পেয়েছি। কাজ প্রায় শেষের পথে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক লিটন ওরফে গুজা লিটন কাজটি জোর করে নিয়ে নিবার চেষ্টা করছে। এরজের ধরে দুপুর আড়াইটার দিকে লিটন ও ডজনের অধিক মামলার আসামি সেলিম মজুমদারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন লোক ইপিজেডের ভিতরে চার্মিন গার্মেন্টসে গিয়ে আমার ম্যানেজার ইকবালকে টেনে হেঁচড়ে বেধরক মারধর করে। তাকে রক্ষা করতে গেলে ইব্রাহীম ও শামীমকেও মরধর করা হয়। পরে তারা সুমিলপাড়া গিয়ে যুবলীগ নেতা আক্তার হোসেনের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।
আক্তার হোসেন বলেন, হিরার সঙ্গে আমিও ইপিজেডে কাজ করি। একারণে আমার অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। আহত ইকবালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আর ইব্রাহীম ও শামীমকে জেলা শহরের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক লিটন ওরফে গুজা লিটন বলেন, চার্মিন গার্মেন্টসের নির্মাণ সামর্গী সরবরাহের কাজ আমি পেয়েছিলাম। হীরার সঙ্গে মিলে আক্তার জোর করে নিয়ে নেয়। আমি প্রতিবাদ করায় বেলা তিনটার দিকে কদমলী এলাকার নামধারী যুবলীগ নেতা জীবন ও আক্তারের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে। এহামলায় আমিসহ, সেলিম মজুমদার, আলাউদ্দিন, আবুল, হৃদয় ও লিটন আহত হয়। তাদের নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ জানা গেছে, গুজা লিটন এলাকায় বিশাল মাদক ব্যবসায়ী চক্র গড়ে তুলেছে। দলীয় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস নিয়ন্ত্রন করছে লিটন। এখন তিনি নজর দিয়েছেন আদমজী ইপিজেডে। নিয়ন্ত্রন নিতে চায় বিভিন্ন কারখানা। নির্মাণাধিন চার্মিন গার্মেন্টসটির কাজ ও নিয়ন্ত্রন নিতে বেশ কিছু দিন ধরে লিটন ও সন্ত্রাসী সেলিম মজুমদার জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে দলীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ঠিকাদার হিরার ম্যানেজার ইকবালকে মারধর করে কাজ না করার কথা বলে। শুধু ইপিজেডই নয় আরো বিভিন্ন উৎস নিয়ন্ত্রন নেওয়ার পাঁয়তারা করছে লিটন ও সেলিম মজুমদার।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শওকত জামিল জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। তবে পুলিশ আসার আগেই তারা চলে যায়। এসে কোন সংঘর্ষ পাইনি। তবে দুইটি অফিস ভাংচুর দেখতে পেয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে দুই অফিস এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত রয়েছে। এঘটনায় কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।