সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :সিদ্ধিরগঞ্জে এস এম আমিনুল হকের মালিকানাধীন বসতবাড়ী জবর দখল করতে হামলা, ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভুমিদস্যু, কিশোরগ্যাং লিডার ও মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা এবং একাধিক মামলার আসামী তানজীম কবির সজুকে প্রধান আসামী করে ১০ জনকে এজাহার নামীয় ও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো রোড পশ্চিম কলাবাগ এলাকার সিরাজুল হকের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-৪৯, ধারা: ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩৫৪/৩৭৯/৪২৭/৫০৬, পেনাল কোড-১৮৬০।
মামলার আসামীরা হলো, সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী উত্তরপাড়া এলাকার মৃত বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবিরের ছেলে তানজীম কবির সজু (৩৫), কদমতলী গ্যাস লাইন এলাকার দেলোয়ার হোসেন দেলুর ছেলে রনি (৪০), মিজমিজি পাগলা বাড়ী এলাকার কিসমত আলীর ছেলে মিলন (৩২), পাগলা বাড়ি এলাকার আ: রব কুট্টি মিয়ার ছেলে আরাফাত বাবু (৩০), কদমতলী উত্তরপাড়া এলাকার সেলিম (৩৪), পাগলা বাড়ী এলাকার বজলুর রহমানের ছেলে বিল্লাল (৩২), কদমতলী জব্বার গার্ডেন এলাকার খালেক সর্দারের ছেলে মহসীন (৩৫), মিজমিজি চৌধুরীপাড়া এলাকার এছরাইল হোসেনের ছেলে আলী মর্তুজা (৬৫), মিজমিজির জয়নাল বেপারীর ছেলে স্বপন (৩২) ও কদমতলীর আসাদুজ্জামান (৪০) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কদমতলী গ্যাস লাইন এলাকায় আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন ১১৭ শতাংশ সম্পত্তিতে রাস্তা সংলগ্ন ১৯টি সেমি পাকা টিনসেড কক্ষ স্থাপন করিয়া বিভিন্ন ভাড়াটিয়াদের কাছে ভাড়া দিয়ে ভোগ দখল করে আসছে। আর মাসুদুর মোমিন সোহাগ বাবু (৪২) কে বাড়ীর ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আসামীরা বিভিন্ন সময় অযৌক্তিক দাবী-দাওয়া উপস্থাপন করিয়া তার ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করিয়া তার মালিকানাধীন সম্পত্তি ও টিনসেড ঘর জবর দখলের পায়তারার লিপ্ত থেকে ভাড়াটিয়াদেরকে রুম ছাড়িয়া চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় ভাড়াটিয়াদেরকে সহ তার ম্যানেজারকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করিয়া থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুলাই রাত আনুমানিক রাত পৌনে ১২টায় অভিযুক্ত আসামরা সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জন প্রত্যেকের হাতে লোহার রড, হকিষ্টিক, কাঠের ঢাসা, জিআই পাইপ এবং দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তার মালিকানাধীন বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে তার ভাড়াটিয়াসহ তার ম্যানেজারের উপর তারা অতর্কিত আক্রমন করে ভাড়াটিয়াদেরকে ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ার চেষ্টা করিলে ভাড়াটিয়াসহ ম্যানেজার বাঁধা দেয়। তখন সজু বাহিনীর প্রধান সন্ত্রাসী সজু এবং চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মিলনের হাতে থাকা লোহার রড ও হকিষ্টিক দিয়ে তার ম্যানেজার সোহাগ বাবুকে এলাপাথারী উপর্যপরী পিটিয়ে তার বাম পায়ের গোড়ালীতে হাড় ভাঙ্গা, গুরুতর জখমসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। তার ভাড়াটিয়া সিদ্দিককে সন্ত্রাসী আরাফাত বাবু ও মহসীন জিআই পাইপ ও লোহার রড দিয়ে এলাপাথারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। তার বাড়ীর মহিলা ভাড়াটিয়াদেরকে অভিযুক্তরা এলাপাথারী মারধর করে তাদের পরিহিত কাপড়-চোপর টানা-হেঁচড়া করে শ্লীলতাহানী করে। এসময় তারা ভাড়াটিয়াদের ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করে আনুমানিক দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং ঘরের মূলবান জিনিসপত্রসহ ৮০/৯০ হাজার টাকার মালামাল তারা লুট করে নিয়ে যায়। প্রধান আসামী সজু ম্যানেজারের কাছ থেকে বাড়ী ভাড়ার নগদ ৪২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় বাড়ির ম্যানেজার ও ভাড়াটিয়াদের ডাক-চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ম্যানেজার ও ভাড়াটিয়াদেরকে ভয়-ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে থাকে এবং তার বাড়িতে স্থাপনকৃত ৩টি সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে, যার আনুমানিক মূল্য ১৫ হাজার টাকাসহ হামলাকারীরা তার সর্বমোট ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ক্ষতি সাধন করে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে আমিনুল ও তার বন্ধু সজীব ঘটনাস্থলে এসে তার ম্যানেজার বাবুকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান (পিপিএম-বার) জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে এস এম আমিনুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।