শামীম আখতার, বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) চৌগাছা উপজেলায় একের পর এক গরীব, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও মানব কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে যাওয়ায় উপজেলাবাসীর মাঝে আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন। তার এই মানবিক চিন্তা চেতনায় এবার ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৫ মাসের শিশু আরবি’র পাশে দাঁড়ালেন উদার মনের অধিকারী ইরুফা সুলতানা।
গত সোমবার (৬ জুন) বিকেলে উপজেলার ধুলিয়ানি ইউনিয়নের কুষ্টিয়া রামভাদ্রপুর গ্রামে ভ্যানচালক মতিয়ার রহমানের বাড়িতে ইউএনও হাজির হয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু মেয়েটিকে কোলে নিয়ে আদরযত্ন করেন এবং নগত ১০’হাজার টাকা পিতামাতার হাতে তুলে দেন। ইউএনও তাদের অসুস্থ্য মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করার দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলেন আরবি’র মা কাজল রেখা। এমন মহতি কাজের জন্য ইউএনও ইরুফা সুলতানার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি সাধুবাদ জানান আরবি’র পরিবার ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, মাত্র ১৫ মাস বয়সেই আরবি’র শরীরে বাসা বেঁধেছে লিভার ক্যান্সার। ভ্যান চালক পিতা মতিয়ার রহমান ও কাজল রেখা দম্পতির একমাত্র সন্তানের ক্যান্সার ধরা পড়ে চলতি বছরের রমজান মাসে। সংসারে অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে কোন রকম চিকিৎসা করানো হয় শিশুটির। আরবি’র শরীরে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। শিশুটি এটা ওটা খেতে চাচ্ছে তবুও কোন ভাবেই খেতে পারছেনা। সারাক্ষণ শুধু কান্নাকাটি করে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা সোমবার বিকেলে বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল নিয়ে শিশুটির বাড়িতে হাজির হন। তারপর অসুস্থ্য শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদরযন্ত করেন এবং নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেন পিতামাতাকে। শুধু তাই নয়! ওই বাড়িতে কিছুক্ষণ অবস্থান করে পিতামাতার সান্ত্বনা ও সাহস দেন এবং সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তার জন্য তার দপ্তরে লিখিত আবেদন করতে বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ, ধুলিয়ানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মোমিনুর রহমান এবং ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান প্রমূখ।
এ ব্যাপারে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা বলেন, মাত্র ১৫ মাসের শিশুর ক্যান্সারে আক্রান্তের খবরটি জানতে পেরে আমার খুবই খারাপ লাগে। কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। বিষয়টি সত্যিই হৃদয় বিদারক। মানবিক চিন্তা চেতনায় তাৎক্ষণিকভাবে শিশু মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে কোলে নিয়ে কিছুটা সময় আদরযত্ন করি এবং পরিবারের নিকট ১০’হাজার টাকা তুলে দিতে পেরে আমি নিজেকে খুবই গর্বিত মনে করছি। গরীব অসহায় মানুষের জন্য আগামিতেও উপজেলা প্রশাসনের এমন ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।