টঙ্গিবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ঃমুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের সিংহেরনন্দন গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান আঃ কাদির হালদার কাউকে কিছু না বলেই চল্লিশ বছরের পুরাতন অর্ধশতাধিক ফলজ গাছ কেটে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বাঁধা দেওয়া হলে ওই ইউপি চেয়ারম্যান গাছের মালিককে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত গাছের মালিক অসহায় হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাচ্ছেন না।
গত ১২ মে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের সিংহের নন্দন গ্রামে মৃত ডা. মো. মেছের আলী খানের বাড়ির পাশের নিজস্ব রাস্তায় এ গাছ কাটার নির্মম ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সিংহের নন্দন গ্রামের মৃত ডা. মো. মেছের আলী খানের বাড়ির পাশে ডাক্তারদের নিজস্ব রাস্তায় চল্লিশ বছরের পুরাতন আম, লিচু, নারিকেল, গাব, সুপারিসহ ৬০টি গাছ দাঁড়িয়ে ছিলো। এসব গাছে বিভিন্ন ঋতুতে প্রচুর ফল ধরতো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গাছগুলোতে প্রচুর আম, লিচু, নারকেল ও সুপারি হয়েছিলো।
এদিকে স্থানীয় আড়িয়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাদির হালদার গাছের মালিককে কিছু না জানিয়েই চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জোর ও জবরদস্তি করে প্রকাশ্যেই সেই চল্লিশ বছরের পুরাতন ফলজ গাছ গুলো কেটে ফেলে ।
এ সময় মৃত ডা. মো. মেছের আলী খানের ছেলে আমজাদ আলী খান গাছ কাটাতে বাঁধা দিলে চেয়ারম্যান মুহাম্মদ কবীর হালদারসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র প্রদর্শন করে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা টঙ্গীবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের কাউকে আটক করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।এর আগেও ওই চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে মৃত ডাক্তারের বাড়ির পাশের ২০টি ফলজ গাছ কর্তন করলে এ বিষয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে ১১৬/২০২২ মামলা দায়ের করা হলে মামলাটি পুলিশের তদন্তাধীন রয়েছে।
গাছ কাটার কথা স্বীকার করে আড়িয়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাদির হালদার জানান, ডাক্তারের বাড়ির পাশের গাছগুলো সরকারি হালটে পড়েছে। সেখান থেকে রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য ১২ ফুট রাস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। সে কারণে গাছ গুলো কাটা হয়েছে।
এদিকে মৃত ডা. মো. মেছের আলী খানের ছেলে সাচ্চু খান জানান, চল্লিশ বছর ধরে এ ফলজগাছগুলো বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। ভালো ফলও ধরতো। গ্রামের সকলে গাছের ফল খেতো। মানুষ গাছের নীচে এসে বসতো। আড়িয়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জোর জবস্তী করে দু’দফায় গাছগুলো কেটে ফেলেছে। আমরা বাঁধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীবাহিনীর অস্ত্রের মুখে পড়েছি। গাছ কাটার বিচার পাচ্ছিনা। মামলা করেও আমরা অসহায়।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ি থানার তদন্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি, তা সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতাও পেয়েছি। আরও তদন্ত করা হচ্ছে।