April 19, 2024, 1:23 pm

২০২০সালে বাসন থানা এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃমামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ শাজাহান আলী (২৪), পিতা-মৃত আজগর আলী, মাতা-মোছাঃ সালেহা বেগম, সাং-তেতুলতলা, থানা ও জেলা-শেরপুর বর্তমান- সাং-দিঘীরচালা (আবুল পালোয়ানের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুরকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২২/০৩/২০২২খ্রিঃ রাত ০৩.৩০ ঘটিকার সময় বাসন থানাধীন দিঘীরচালা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার স্বীকারোক্তি মতে একই তারিখ ০৪.১০ ঘটিকার সময় দিঘীরচালা এলাকা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী ২। মোঃ রাজিব হোসেন (২১), পিতা-মৃত নুর মোহাম্মদ, মাতা-মোছাঃ মাহফুজা, সাং-মিয়াপাড়া, থানা-দেওয়ানগঞ্জ, জেলা-জামালপুর বর্তমান সাং-দিঘীরচালা (নর্থ সাউথ স্কুল), (শাজাহানের বাড়ির ভাড়াটিয়া), থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত উভয় আসামীর স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী ৩। মোঃ আলামিন (২৭), পিতা-মোঃ সাইফুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ হালিমা বেগম, সাং-পশ্চিম দিঘীরচালা, থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুরকে সদর থানাধীন শিমুলতলী এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে একই তারিখ ০৫.২০ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ঃ
গত ১৯/১১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ গাজীপুর হতে মোঃ শরিফুল ইসলাম তার শশুড় বাড়ি বগুড়া জেলাধীন শেরপুর থানার দুবলাগাড়ি এলাকায় ১ দিনের জন্য বেড়াতে যায়। শশুড় বাড়ি হতে গত ২০/১১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ রাত ১২.০০ ঘটিকার পরে গাজীপুর আসার জন্য রওনা হয়ে ভোর ০৬.০০ ঘটিকার সময় গাজীপুরে পৌঁছানোর কথা। ২১/১১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ দুপুর অনুমান ০২.২০ ঘটিকার সময় বাসন থানা পুলিশ মারফত বাদী মোঃ সাইফুল ইসলাম ফোনে জানতে পারেন সকাল ০৮.০০ ঘটিকার সময় দিঘিরচালা সাকিনস্থ সেবা হাসপাতালের পিছনে বাদীর ছোট ভাই মোঃ শরিফুল ইসলাম এর মৃত দেহ পাওয়া গেছে। তখন বাদী দ্রুত বাসন থানায় এসে পুলিশের নিকট জানতে পারেন যে, বাদীর ছোট ভাই মোঃ শরিফুল ইসলামকে ভোর অনুমান ০৫.০০ ঘটিকা হতে ০৬.০০ ঘটিকার মধ্যবতর্ী যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা খুনিরা পায়ে এবং পিঠে ছুরিকাঘাত করতঃ হত্যা করে বাসন থানাধীন দিঘিরচালা সাকিনস্থ সেবা হাসপাতালের পিছনে ফেলে রেখে গেছে। এ সংক্রান্তে বড় ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে বাসন থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলে বাসন থানার মামলা নং-২২ তাং-২১/১১/২০২০ খ্রিঃ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। মামলাটি ৪ মাস ১৩ দিন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা পুলিশ তদন্ত করে কোনো রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।

অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এঁর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান. পিপিএম তদন্ত করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ শাজাহান আলী (২৪) ২। রাজিব হোসেন ০৩। মোঃ আলামিন (২৭)গণ গত ২১/১১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০১.০০-০১.৩০ টার সময় ভাওয়াল কলেজের উত্তরে দিঘীর পাড়ে অন্যান্য সহযোগিদের নিয়ে বসে আড্ডা দেয় এবং গাঁজা সেবন করে। ঐ সময় তাদের একজন সহযোগী বলে তার হাতে টাকা পয়সা নেই চলো সবাই মিলে ছিনতাই করি। পরে তারা সবাই ভাওয়াল কলেজের সামনের রাস্তায় আসে এবং সবাই মিলে ২/৩ টা ছিনতাই সংঘটিত করে পথচারীদের টাকা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাত অনুমান ০৪.০০-০৫.৩০ ঘটিকার সময় একটি অটোযোগে ভিকটিম মোঃ শরিফুল ইসলাম গাজীপুর চৌরাস্তার দিকে যাইতেছিল। তখন গ্রেফতারকৃত আসামী এবং তাদের সহযোগীগণ ভিকটিম শরিফুল ইসলামকে বহনকারী অটোটি থামায় এবং ভিকটিমকে বলে তোর নিকট যা আছে, সব দিয়ে দে। তখন ভিকটিম ছিনতাইকারীদের মধ্যে একজনকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার অপর দিক দিয়ে দৌড়ে সেবা হাসপাতালের দিকে চলে যায়। তখন গ্রেফতারকৃত আসামীগণ এবং তাদের সহযোগীগণ ভিকটিমের পিছন পিছন দৌঁড়ে সেবা হাসপাতালের সামনে গিয়ে ভিকটিমকে ধরে ফেলে। ছিনতাইকারীগণের কাছে থাকা গামছা দিয়ে ভিকটিম মোঃ শরিফুল ইসলাম এর মুখ চেপে ধরে টানতে টানতে সেবা হাসপাতালের পিছনে নিয়া যায়। এরপর ছিনতাইকারীগণ ভিকটিম এর সমস্ত শরীর ও ব্যাগ তল্লাসী করে ১টি মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা পায়। তখন ভিকটিম মোবাইল ফোন ও টাকা দিতে না চাওয়ার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের সাথে ছিনতাইকারীদের ধস্তাাধস্তি হয়। পরবতর্ীতে ছিনতাইকারীদের হাতে থাকা চাকু(সুইচ গিয়ার) দিয়ে ভিকটিম এর পিঠে ও পায়ে আঘাত করলে ভিকটিম মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। এরপর ছিনতাইকারীগণ লুন্ঠিত মালামাল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে । পরবতর্ীতে ছিনতাইকারীগণ মোবাইল বিক্রি করে বিক্রিত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, অত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামীগণ মাদক সেবী এবং সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং তাদের সহযোগীসহ ছিনতাই করাকালে গত ২১/১১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ ভিকটিম শরিফুল ইসলাম ছিনতাই কাজে বাধা প্রদান করলে এবং মোবাইল ফোন ও টাকা না দেওয়ার কারণে আসামীগণ তাদের সহযোগীসহ ধারালো অস্ত্র দ্বারা ভিকটিমকে আঘাত করে হত্যা করতঃ মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ শাজাহান আলী, রাজিব হোসেন ও মোঃ আলামিনকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামীগণ নিজেদেরকে জড়িয়ে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপর সহযোগী আসামীদের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞ আদালতে ২২/০৩/২০২২ খ্রিঃ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ঃ পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান পিপিএম, পিবিআই গাজীপুর জেলা।

তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা ও পিবিআই গাজীপুর ইউনিট

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা