January 22, 2025, 4:02 pm

হাজারীবাগ থেকে পিচ্চি মনির ও তার সহযোগীকে বিদেশী অস্ত্র, ইয়াবা ও নগদ অর্থসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ২০২১ সালের রাজধানীর মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ এলাকা থেকে “ভাইব্বা ল কিং” নামক কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাসী “কবির বাহিনী”সহ বেশ কয়েকটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রæপের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সম্প্রতি র‌্যাব রাজধানীর মোহাম্মাদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ এলাকায় বেশ কয়েকটি অবৈধ অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য চক্রের সন্ধান পায়। ফলশ্রæতিতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

৩। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাতে র‌্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকাস্থ মধুবাজারের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসার অন্যতম হোতা আব্দুল্লাহ মনির@ পিচ্চি মনির(৩৩), পিতাঃ মৃত চাতক শাহ, জাজিরা, শরীয়তপুর ও তার সহযোগী (২) মোঃ জুবায়ের হোসেন (৩৩), পিতাঃ মোঃ বাচ্চু ফরাজী, বরিশাল’দেরকে গ্রেফতার করে। উক্ত অভিযানে জব্দ করা হয় ০২টি বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন, ১২ রাউন্ড তাজা গুলি, ১৮,৭৭০ পিস ইয়াবা, ০৬ গ্রাম আইস এবং মাদক বিক্রয়লব্ধ নগদ ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মনির মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।

৪। গ্রেফতারকৃত পিচ্চি মনিরের পরিবার জীবিকার সন্ধানে ১৯৯৫ সালে ঢাকায় চলে আসে এবং লালবাগ থানার শহীদনগর এলাকায় বসবাস শুরু করে। মনির এর পিতা জীবিকা নির্বাহের জন্য ফলের ব্যবসা শুরু করেন। মনির তাকে সহযোগিতা করত। এক সময় মনির এলাকার বখে যাওয়া ছেলেদের সাথে চুরি, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধের মাধ্যমে তার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয়। ধীরে ধীরে সে এলাকার বখাটেদের নিয়ে লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় একটি অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। এই চক্রটি ব্যবহার করে সে মাদক ব্যবসা শুরু করে।

৫। গ্রেফতারকৃত জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ২০১২ সাল থেকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় সে ও তার জনৈক বন্ধু পার্টনারশীপে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হয়। প্রথমে স্থানীয় মাদক ডিলারদের কাছ থেকে অল্প অল্প করে মাদকদ্রব্য ক্রয় করে খুচরা মাদক সেবীদের নিকট বিক্রয় করত। ২০১৬ সালে কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে তার মাদক নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এরপর টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে তার নিকট নিয়মিত মাদকদ্রব্য ইয়াবা সরবরাহ করা হত। মাঝে মধ্যে সে ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঢাকা থেকে কক্সবাজার গমন করে মাদকের চালান নিয়ে আসত। মূলত তারা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অর্থ লেনদেন করত। শতকরা ২০ শতাংশ হারে এ্যাডভান্স পেমেন্টে এর মাধ্যমে ইয়াবা ঢাকায় চলে আসত। মাদকের ডেলিভারী ও লেনদেন গ্রেফতাকৃত মনিরের ভাড়া বাসায় বা সুবিধামত স্থানে সম্পন্ন হত। গ্রেফতারকৃত মনির ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় ভাড়াটিয়া ছদ্মবেশে মাদকের গোপন কারবার করত।

৬। গ্রেফতারকৃত মনির আরও জানায়, সে প্রতিমাসে কয়েকটি চালান টেকনাফ, কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসত। সে মিরপুর-১৩, ইসলামবাগ, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, আজিমপুরসহ আরো কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ীদের মাদক সরবরাহ করত। প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতার জন্য ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। কৌশলগত কারণে খুচরা বিক্রেতাদের পারস্পরিক অপরিচিত রাখা হত। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মোহাম্মদপুর থানার হাতিরপুল এলাকার তার ২য় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া করা বাসা থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়। সে এক একটি এলাকায় এক-দুই বছরের বেশী অবস্থান করত না। উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত মনির নিজ বাড়ীতে কোটি টাকার স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সে তার বাবার কৃতি সন্তান তা জনসাধারনকে জানানোর উদ্দেশ্যে এবং এলাকায় প্রচারের উদ্দেশ্যে সে মাদক ব্যবসার অবৈধ টাকা দিয়ে তার বাবার কবরে একটি মাজার নির্মাণ করছে।

৭। গ্রেফতারকৃত মনির ২০১৮ সাল হতে অস্ত্র ব্যবসা শুরু করে। সে ২০১৮ সালে অবৈধ পিস্তলসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয় এবং ০৭ মাস কারা অন্তরীণ ছিল। পরবর্তীতে সে ২০২০ সালে অস্ত্র ও মাদক মামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। এ সময় সে ০১ বছর কারাবরণ করেছে। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদক সংক্রান্ত সর্বমোট ০৩টি মামলা রয়েছে।

৮। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা