স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খড়াশুনি গ্রামে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় স্ত্রীকে অমানষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে লিমন পারভেজ নামের আদালতের এক পেশকারের বিরুদ্ধে। সেই সাথে যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় ওই গৃহবধুকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় অর্থলোভী পেশকার লিমন পারভেজ। এ ঘটনায় নির্যাতিতা ওই গৃহবধু দুটি মামলা দায়ের করেছেন। জানা গেছে, ২০১০ সালে পারিবারিক ভাবে কালীগঞ্জ উপজেলার খড়াশুনি গ্রামের মহাশিন আলীর ছেলে লিমন পারভেজের সাথে একই উপজেলার চাপালী গ্রামের পুলিশ সদস্য ফারুক হোসেনের মেয়ে ফারজানা আক্তার মুন্নীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে স্বর্ণের আংটি, চেইন, গহনাসহ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার উপহার সামগ্রী দেয়। বিয়ের পর ভালো ভাবেই চলছিল তাদের সংসার। ৪ বছর আগে তাদের ঘর আলো করে একটি কণ্যা সন্তান জন্ম নেয়। যশোরের শার্শা-বেনাপোল কোর্টের পেশকার হওয়ার সুবাদে লিমন পারভেজ যশোরে থাকা শুরু করে। চাকুরীর কথা বলে শশুরের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। সেসময় তাকে ৬ লাখ টাকা যৌতুক দিতে বাধ্য হয় মুন্নীর পিতা। চাকুরী পাওয়ার পর থেকেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে সে। কালীগঞ্জের এক কলেজ ছাত্রীর সাথে পরকীয়া করে আসছিল। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারলে বিভিন্ন সময় তাকে নিষেধ করে। এরপরও সে পরকীয়া চালিয়ে যায়। স্ত্রী মুন্নী বাঁধা দিলে শুরু হয় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। সেই সাথে আবারো ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। পরকীয়ায় বাঁধা ও যৌতুক না পেয়ে প্রতিনিয়ত মুন্নীকে অমানষিক নির্যাতন করে যৌতুকলোভী লিমন পারভেজ। সর্বশেষ চলতি মাসের ১৮ তারিখে যশোরের নতুন খয়েরতলা গোরস্থানপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকার সাথে মোবাইলে কথা বলে নারীলোভী লিমন। মোবাইলে কথা বলার বিষয়টি মুন্নী টের পেয়ে নিষেধ করলে বেধড়ক মারপিট করে তাকে। এক পর্যায়ে গলায় টিপে হত্যার চেষ্টা করে। মুন্নীর আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরদিন সকালে মুন্নীকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক আনতে বাবার বাড়ীতে যেতে বলে। মুন্নী টাকা আনতে অস্বীকার করলে তাকে আবারো মারধর করে বাড়ী থেকে বের করে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর মুন্নী বাবা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। মুন্নীর ৪ বছরের মেয়ে রোজা আধো আধো কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা আমার মাকে গলা টিপ দিয়ে ধরেছিল। আমি তখন বসেছিলাম। দেখলাম। মুন্নী বলেন, আমি সুখে সংসার করতে চায়। কিন্তু লিমন পারভেজ পরকীয়ায় জড়িয়ে আমাকে নির্যাতন করে। আমি এর বিচার চাই। আদালতের পেশকার হওয়ার কারণে তিনি আমাদের বলছে কোথাও গিয়ে নাকি আমরা বিচার পাব না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লিমন পারভেজের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা। আমার সাথে স্ত্রীর বনি বনা না হওয়ায় আমি গত মাসের ১৯ তারিখে তাকে ডিভোর্স দিয়েছি। আমার নামে দুটি মামলা করেছে। আমি আদালতে চাকরি করি। আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আইনগত ভাবে দোষী প্রমাণিত হলে আমি শাস্তি পাব।