April 19, 2024, 7:09 pm

ভারতে ধর্মঘটে বেনাপোল দিয়ে বন্ধ আমদানি-রফতানি

বেনাপোল প্রতিনিধি: ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট কর্মচারীদের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও ট্রাক চালকদের হয়রানির অভিযোগে বনগাঁ গুড ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে।

সোমবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্দরের দুপাশে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় সহস্রাধিক ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে। এর আগে এ সংগঠনটির ডাকে গত সপ্তাহে ৩ দিন এই পথে বন্ধ ছিল আমদানি বাণিজ্য।

এদিকে ধর্মঘটের কারণে টানা ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধের কবলে পড়ায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে এপথে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখার দাবি তাদের।

ঋারতের পেট্রাপোল বন্দরের স্টাফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র জানান, কোভিড ১৯ এর কারণে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৫০০ থেকে ৬০০ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে রফতানি হতো করোনার কারণে এখন মাত্র সাড়ে তিনশো ট্রাক পণ্য রফতানি হচ্ছে। এরপর নতুন এলপি ম্যানেজার ব্যবসায়ীদের সাথে কোন আলোচনা না করে বন্দর এলাকায় প্রবেশের উপর নতুন নতুন আইন তৈরি করে আমাদের বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। পণ্য পরিবহন কাজে জড়িত ট্রান্সপোর্ট কর্মীদের বন্দরে প্রবেশে বিএসএফের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কাস্টমস ও বন্দরের স্বাক্ষরিত ইউনিক কার্ড ছাড়া কোনো পরিবহন কর্মীকে আইসিপি ও বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারায় আমদানি-রফতানি কাজে জড়িতদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই কার্ড তৈরি করতে তো সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু বিএসএফ তা মানবে না। এসব হয়রানির প্রতিবাদে প্রশাসনের সাথে বৈঠক করা হলেও বন্দরের এলপি ম্যানেজার তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। আমদানি-রফতানি কাজে বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশসহ নানা হয়রানি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজিম বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এপথে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। বেনাপোল বন্দরের নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্বে বন্দরের আনসার, আর্মস ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও বেসরকারি সংস্থা পিমা কর্মীরা থাকলেও ভারত অংশে পেট্রাপোল বন্দরের নিরাপত্তায় রয়েছে সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। ভিনভাষী বিএসএফ বাঙালিদের কথা বোঝে না। বাঙালিরাও তাদের কথা বোঝে না। এক এক সময় এক এক নিয়ম করে বিএসএফ। এতে গেল কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। কর্মবিরতি আর ধর্মঘটে বছরের বড় একটি সময় বন্ধ থাকে বাণিজ্য। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি রফতানিকারক শামিম হোসেন বলেন, ভারত থেকে আমদানি হয় তার বড় একটি অংশ শিল্প কলকারখানার কাচাঁমাল, তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস, শিশু খাদ্য, কেমিকেল ও পচনশীল জাতীয় খাদ্য দ্রব্য। কর্মবিরতির কবলে পড়ে সহস্রাধিক ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে। দ্রুত বাণিজ্য চালু না হলে লোকশান বাড়বে।

বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারতের পেট্রপোল বন্দরে ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। ওপারে এলপি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন আন্দোলন করছেন। বাণিজ্য বন্ধ থাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বেনাপোল বন্দরে। চলমান সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে বাণিজ্য চালুর অনুরোধ জানানো হয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা