শামীম আখতার, বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) খুলনায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শাওন নামের এক যুবককে হত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়ে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে সন্ত্রাসীরা। গত ১৬ জানুয়ারী (রবিবার) সন্ধ্যায় নগরীর বয়রা বাজার মোড়ে হামলার ঘটনাটি ঘটে। হামলায় কেউ হতাহত না হলেও পুলিশ হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে আটক করেছে। ওই সময় তার কাছ থেকে ২টি পিস্তল, ১০রাউন্ড গুলি ও ১টি ককটেল উদ্ধার করেন। ঘটনার পরপরই এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, খুলনা বয়রা মোড়ে পাবলিক কলেজের বিপরীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুইটি মোটরসাইকেলে যোগে গ্রেনেড বাবু (৩২), সাইদুল ওরফে সাইদুর (৩৭), পলাশ ওরফে চিংড়ি পলাশ (২৮), ইমন (৩০), রাসেল (২৭) ও তুহিন (২৬) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জন সন্ত্রাসীরা পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা শাওন (৩২) কে হত্যার উদ্দেশ্য প্রথমে গুলি করলে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় এবং পরবর্তীতে ককটেল নিক্ষেপ করে। ওই সময় বয়রা পাবলিক কলেজ মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট বেতারের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করেন এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য সংগীয় পুলিশ ফোর্সদের সহায়তায় রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করলে বয়রা মোড়ের দিক থেকে আসা ২টি মোটরসাইকেলে ৬ জন ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে সিগনাল দিলে তারা সিগনাল অমান্য করে পালানোর চেষ্টাকালে মোটরসাইকেল দুইটির সংঘর্ষে ১টি মোটরসাইকেল পিছনে থাকা একজন পাঁকা রাস্তার উপর পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয় এবং গুরুতর আহত ব্যক্তিকে ধৃতকালে অপর অজ্ঞাতনামা ৫ জন ব্যক্তি মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। আহত ধৃত আসামী সাইদুল ওরফে সাইদুর (৩৭) রুপসা থানার রাজপুর কাজীরহাট গ্রামের মৃত-সুলতান এর ছেলে। বর্তমানে সোনাডাঙ্গা গোবরচাকা নাহিদের মোড় ইউনুস সরদারের বাড়ীতে থাকে। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রিজন সেলে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আছে।
গ্রেফতার আসামীর কাছ থেকে ১টি .৩২’’ বোরের রিভলবার, যাহার গায়ে ইংরেজিতে WEBLEY & SCOTT LTD MADE IN ENGLAND MARK-IV, .32’’ LONG .916 3 TONS এবং গ্রিপে ইংরেজিতে Webley লেখা আছে, ১টি কাঠের বাটযুক্ত ৭.৩৫ পিস্তল এবং ১টি ম্যাগাজিন ৪ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, যাহার পিছনে 7.65 BT14 B&S লেখা আছে এবং যাহার ১ রাউন্ড গুলির পিছনে ফায়ারিং পিনের আঘাতের চিহ্ন আছে, ৬ রাউন্ড রিভলবারের গুলি যাহার পিছনে .32 S &WL PMC লেখা আছে এবং যাহার ১রাউন্ড গুলির পিছনে ফায়ারিং পিনের আঘাতের চিহ্ন আছে, পরিহিত জিন্স প্যান্টের সামনের ডান পকেট হতে ১টি লেডবল কার্তুজ, যাহার পিছনে, 12*12* লেখা এবং মহাসড়কের উপর থেকে সিমেন্টের বস্তার তৈরী বাজার করা ব্যাগের মধ্যে পাটের সুতা দ্বারা পেঁচানো ১টি তাজা ককটেল খুলনার র্যার-০৬ এর বোমা ডিস্পোজাল টিমের সহাযতায় উদ্ধার পূর্বক সকল আলামত জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় কেএমপি’র খালিশপুর থানার এসআই পীযূষ দাস বাদী হয়ে গ্রেনেড বাবু (৩২), সাইদুল রওফে সাইদুর (৩৭), পলাশ ওরফে চিংড়ি পলাশ (২৮), ইমন (৩০) এবং রাসেল (২৭) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(A), তৎসহ ১৯০৮ সনের বিষ্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩/৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর -১২।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র-গুলি ও ককটেলসহ আহত অবস্থায় সাইদুলকে গ্রেফতার করা হয়। সে বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অস্ত্র গুলি ও ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।