প্রেস বিজ্ঞপ্তি* গত ইং ২৫/১১/২০২১ তারিখ আনুমানিক ৭ ৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম লুৎফর রহমান (৪২) পিতা- মৃত নাজিমদ্দিন শেখ, মাতা-মোছাঃ হালিমা বেগম, সাং-হুলাইল, থানা-বালিয়াকান্দি, জেলা- রাজবাড়ী এ/পি- সাং- চনপাড়া (বটতলা), মাকসুদা বেগমের ভাড়াটিয়া, থানা-রূপগঞ্জ , জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে ৬/৭ জন ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিকটিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলে পিস্তল দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়। গাড়িতে উঠানোর পর তারা ভিকটিমের চোখ-মুখ বেঁেধ তার কাছে থাকা ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং গাড়ির ভিতর উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমকে অজ্ঞাতনামা স্থানে নিয়ে “তোকে মুন্সিগঞ্জ বিলে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে এসেছি, আমাদেরকে ১০ লক্ষ টাকা না দিলে তোকে জানে মেরে ফেলব বলে হুমকি দেয়”। এক পর্যায়ে ভিকটিম তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চায়। তখন তারা ভিকটিমকে নিয়ে তার বর্তমান ঠিকানার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করে। অতঃপর ২৬/১১/২০২১ তারিখ আনুমানিক ০০৩০ ঘটিকার সময় তার বাসায় এসে ধৃত আসামী রিপন সরদার, আহমেদুল কবির খান @ কাজল ও মোঃ লোকমান চৌধুরী ভিকটিমের মোবাইল ফোন হতে ভিকটিমের স্ত্রী ও ছেলেকে বলে “তোমার বাবাকে আমরা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করেছি, বর্তমানে তোমার বাবা আমাদের ঢাকার মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে আছে। তোমরা আমাদেরকে ৫০ হাজার টাকা দিলে আমরা তোমার বাবাকে ছেড়ে দিব।’’ পরবর্তীতে ভিকটিমকে নিয়ে তারা ধৃত আসামী মোঃ মোসলেম উদ্দিন বাপ্পি’র বাসায় নিয়ে যায় এবং উপুর্যপুরি মারধরসহ বৈদ্যুতিক শক দিয়ে ভিকটিমের পরিবার থেকে ০৫ লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য বলে। ভিকটিম ধৃত আসামীদের ০১ লক্ষ টাকা দিতে পারবে জানালে তারা তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দেয়। ভিকটিমের ছেলে ইং ২৬/১১/২০২১ তারিখ সকালে বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে ভিকটিম তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে পুনরায় চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন করে এবং তার ভিডিও পরিবারকে দেখিয়ে আরো ০৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতা নিলে ভিকটিমকে জানে মেরে ফেলবে মর্মে হুমকি প্রদান করে। এসংক্রান্তে ভিকটিমের পরিবার নারায়নগঞ্জজেলার রূপগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। যার নম্বর-১৪৪০ তারিখ ২৯/১১/২০২১। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার র্যাব-১ এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১ বর্ণিত অপহরণকারী চক্রের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষনে এ ম্যানুয়াল সোর্সের মাধ্যমে দ্রæততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
৪। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ ০০৩০ ঘটিকায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড বাসস্ট্যান্ডের সামনে ফুটওভার ব্রীজের নীচে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তরপাশে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ১) রিপন সরদার (২৫), পিতা-মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ২) আহমেদুল কবির খান @ কাজল (৪৫), পিতা- মৃত মোশারফ হোসেন, মাতা-মৃত খাদিজা খানম, জেলা- মুন্সীগঞ্জ, ৩) মোঃ মোসলেম উদ্দিন বাপ্পি (৩১), পিতা- মোঃ খলিলুর রহমান, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ৪) মোঃ আসলাম (৩২), পিতা- মৃত হাফিজ মিয়া, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ৫) রশিদ চাকলাদার (৩২), পিতা- মোঃ মান্নান চাকলাদার, জেলা- গোপালগঞ্জ’দেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে ০২ টি ডিবি জ্যাকেট, ০২ টি খেলনা পিস্তল, ০১ টি হ্যান্ডকাফ, ১১ টি মোবাইল ফোন, ০১ টি প্রাইভেটকার এবং নগদ ২৫,০০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা একটি অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে। তারা পরস্পর যোগসাজশে ডিবি পরিচয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ আশে পাশের এলাকায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে ওৎ পেতে থাকে এবং ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর হামলা করে ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়, শারিরীক নির্যাতন করে, বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণ করে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ আদায় করে আসছে মর্মে জানায়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।