April 25, 2024, 9:42 am

স্কুলে যাওয়ার জন্য হুইল চেয়ারের আকুতি প্রতিবন্ধী রিফাত হাসান রাব্বির

শামীম আখতার,বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) যশোরের কেশবপুরে স্কুলে যাওয়ার জন্য একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন ১২ বছরের প্রতিবন্ধী রিফাত হাসান রাব্বি নামের এক স্কুল ছাত্র। সে জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকার কারণে সে হুইল চেয়ারে বসে স্কুলে যেতে চায়। তার স্বপ্ন হলো লেখা-পড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হবে। শারীরিক অক্ষমতা ও দ্রারিদ্রতার কষাঘাতে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাকে। করিমন চালক পিতার পক্ষে শিশু পুত্রের জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছেনা। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষের কাছে প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য একটি হুইল চেয়ারের সহযোগিতা চেয়েও সেটি এখনো মেলেনি। পেয়েছেন শুধুই আশ্বাস!
এমন একজন প্রতিবন্ধীর লেখাপড়া ও উজ্জল ভবিষ্যত গড়ে তোলার লক্ষে একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করতে আমরা কি পারিনা ? শুধু একটি হুইল চেয়ার হলেই প্রতিবন্ধী রিফাতের জীবনের স্বপ্নপূরণ হতে পারে উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার।
কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের শাহাজাহান মল্লিকের ছেলে রিফাত হাসান রাব্বি জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। পায়ের নিচের অংশ চিকন ও বাঁকা হওয়ায় হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করে সে। দারিদ্র পরিবারের মাঝে জন্ম তবুও লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ তার। পিতা শাহাজাহান মল্লিক করিমন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। অল্প উপার্জনের মধ্যে দিয়ে সংসার চলে অভাব-অনাটনে। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে প্রতিবন্ধী রিফাতকে নিয়েই এখন পিতা-মাতার ভাবনা। তবে গরীব হলেও প্রতিবন্ধী ছেলে পড়াশোনার প্রতি খুবই মনযোগী থাকায় ছেলেকে স্থানীয় বিষ্ণুপুর আনন্দ নিকেতন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সে বর্তমানে ওই স্কুলের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র।
প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্র রিফাত হাসান রাব্বি হাস্যোজ্জল মুখে বলেন, আমাকে একটা হুইল চেয়ার কিনে দিবেন। আমি সেই চেয়ারে চড়ে স্কুলে যাব। আমার চলাফেরা ও স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। লেখা-পড়া শিখে আমি মানুষের মতো মানুষ হবো। কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি আমাকে সহায়তা করেন তাহলে সারাটি জীবন তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
এ দেশের সরকার ও হৃদয়বান মানুষের কাছে একটি হুইল চেয়ার ক্রয়ের জন্য আর্থিক অনুদান কামনা করছেনও তিনি।
প্রতিবন্ধীর পিতা শাহাজাহান মল্লিক বলেন, খুব ছোট বেলা থেকেই আমার প্রতিবন্ধী ছেলের স্কুলে যাওয়ার বায়না ছিল। শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে তাকে স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। স্বামী-স্ত্রী যে যেদিন সময় পায় তাকে কোলে করে স্কুলে আনা-নেওয়া করে থাকি। এখন ছেলে বড় হচ্ছে, অনেক কষ্ট হয় কোলে করে স্কুলে আনা-নেওয়া করতে। এখন সে নিজেই হুইল চেয়ারে বসে স্কুল যেতে চায়। অভাবের কারণে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি, সেখানে ছেলের জন্য হুইল চেয়ার কিনব কীভাবে। তাকে হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য এই মুহূর্তে আমার নেই। প্রতিবন্ধীছেলের জন্য একটি হুইল চেয়ারের আশায় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শেনী-পেশার মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়েও সেটি এখনো মেলেনি। পেয়েছি শুধুই আশ্বাস।
এব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, বরাদ্ধ পেলেই স্কুল ছাত্র প্রতিবন্ধী রিফাত হাসান রাব্বিকে হুইল চেয়ার প্রদান করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা