September 8, 2024, 1:11 pm

আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার, লুন্ঠিত মাইক্রোবাস, টাকা ও মোবাইল উদ্ধার

শামীম আখতার ,বিভাগীয় প্রধান (খুলনা) যশোর জেলার ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার করেছে। ওই সময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত মাইক্রোবাস, মোবাইল ও বিভিন্ন মালামাল, নগদ টাকাসহ ৩৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার মালামাল উদ্ধার করাসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেটকার ও ২টি চাকু জব্দ করেন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঘারপাড়া থানার সুকদেবনগর এলাকায় পাঁকা রাস্তার উপর স্থানীয় জনগণ সংবাদ পেয়ে ১টি মাইক্রোবাসসহ ৪ জন ডাকাত সদস্যকে আটক করে বাঘারপাড়া থানা পুলিশকে খবর দেয়, তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটককৃত ডাকাতদেরকে গ্রেফতার এবং লুন্ঠিত মাইক্রোবাস ও গাড়িতে থাকা ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার নয়নপুর গ্রামের মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান (৪০),সাতক্ষীরা জেলার মাছখোলা গ্রামের জমাত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩০), যশোর জেলার শার্শা থানার সেতাই গ্রামের নাজির উদ্দিন শেখের ছেলে দেলোয়ার হোসেন(৫২) ও একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কামরুজ্জামান (৩৫) ।

জানা যায়, গাড়ির ড্রাইভার ইকবাল হোসেন ও সঙ্গীয় আশরাফুজ্জামান তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস যোগে ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর বেলায় সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রূপসা ফেরিঘাট দিয়ে খুলনা ডুমুরিয়া থানার গুটুদিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে ১টি মাইক্রোবাস ও ১টি প্রাইভেটকার বেরিকেট দিয়ে তাদের গতিরোধ করে অস্ত্র দ্বারা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদেরকে আটক করে চোখ ও হাত-পা বেঁধে সকাল অনুমান ৮:৪৫ ঘটিকার সময় বাঘারপাড়া থানার সাইটখালী এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। স্থানীয় জনগণ তাদেরকে উদ্ধার করে ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে মোবাইল ফোনে বাঘারপাড়া থানা পুলিশকে অবহিত করে এলাকার লোকজনের প্রচেষ্টার একপর্যায়ে সকাল অনুমান ১০ ঘটিকার সময় সুকদেবনগর এলাকায় ৪ জন ডাকাতকে লুণ্ঠিত মাইক্রোবাসসহ হাতে নাতে আটক করে। এ ঘটনা সংক্রান্তে সাতক্ষীরা জেলার সদর থানার হাড়দাহ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নং-০৭।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখার উপর তদন্তভার দেন। গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর উপর ন্যাস্ত করেন।
পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এঁর তত্ত্বাবধানে ডিবি’র অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিসুর রহমান, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শাহীনুর রহমান, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেনদের সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম তদন্তে নামে। আসামীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক খুলনা মেট্রোপলিটনের খালিশপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেটকার ও ২টি চাকু জব্দ করাসহ লুন্ঠিত নগদ ২০ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। আসামী মিজানুর রহমান পুলিশ বিভাগ থেকে একইরূপ ঘটনায় ২০১৫ সালে চাকুরীচ্যুত হয়ে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের ব্যবহৃত গাড়ী যোগে ডিবি পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ছিনতাই ডাকাতি সংঘটন করে থাকে বলে জানা যায়। আরো জানা যায়, গাড়িতে স্বর্ণ আছে তথ্য পেয়ে আসামীরা রুপসা ফেরিঘাট থেকে পিছু নিয়ে খুলনা ডুমুরিয়া থানা এলাকায় গাড়িটি গতিরোধ করে গাড়িতে থাকা বাদী ও সঙ্গীয় ১ জনকে আটক করে। বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গাড়িতে কোন স্বর্ণ ছিল না। এই বিষয়ে জেলা ডিবি পুলিশের গভীর তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা