September 10, 2024, 3:16 pm

অপরাধের আখড়া সিএনবি কলোনী উপ-প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ কোটি কোটি টাকার সরকারি যন্ত্রাংশ বিক্রি

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার তারাবো সিএনবি কলোনীতে অনিয়মসহ অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে কর্মকর্তাদের যোগ-সাজসে কলোনীতে রাখা কয়েক কোটি টাকার সরকারি মালামাল বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য উত্তোলন করা ৪ শতাধিক ঘরে ভাড়া থাকছেন সাধারণ মানুষ। এ কলোনীতে এখন দিন-রাত জুয়ার আসর, মাদক কেনাবেচা ও অসামাজিক কাজের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। অনেকেই অফিস না করেও হাজিরা খাতায় মাস শেষে স্বাক্ষর দিয়েই তুলে নিচ্ছেন বেতন-ভাতা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের চিটাগাং রোডের শিমরাইলস্থ অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য তারাবতে সিএনবি কলোনী করা হয়। এখানে সরকারি সব ধরণের যানবাহন চালক, হেলপার, দারোয়ান, পিয়ন, শ্রমিকরা স্বপরিবারের থাকার কথা। কিন্তু এখন বসবাসকারী সবাই ভাড়াটে। কারণ তারা কেউ সরকারী চাকুরিজীবি না। তারা বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এখানে কেউ কেউ নিরাপদে মাদক কেনাবেচা করছে। আবার কেউবা জুয়ার আসর জমায়। সূর্য ডুবার সাথে সাথেই শুরু হয় অসামাজিক কর্মকান্ডও।
চিটাগাং রোডের শিমরাইলস্থ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরী চালক মো. শাহজাহান মিয়া। তিনি ৩ বছর আগে কর্মস্থল থেকে অবসরে যান। এখনো পেনশনের টাকা পাননি। শাহজাহান মিয়া তারাব সিএনবি কলোনীর একটি ঘরে বসবাস করতেন। শত শত ঘর ভাড়া দিয়ে টাকা উত্তোলন করছেন চিটাগাং রোড অফিসের উপ-প্রকৌশলী শামীম আহম্মেদ ও তার সহযোগি রুলার চালক হুমায়ুন কবির বকুল, দারোয়ান নুর মোহাম্মদ, পিয়ন জসিম, ছাত্তার, চালক ফারুক। কিন্তু চাকরী থেকে অবসরে গেলেও এখনো পেনশনের টাকা পাননি শাহাজাহন মিয়া। গত ৭ আগষ্ট জোরপূর্বক তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন উপ-প্রকৌশলী শামীম আহম্মেদের নির্দেশে তার সহযোগিরা। অথচ শাহজাহানের আসবাবপত্র, মালামাল, চিকিৎসার সকল কাগজপত্রও ওই ঘরে রয়েছে। এখন তিনি তারাব বাজারের আশপাশের অলিগলিতে দিনযাপন করছেন।
জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকার বেইলী সেতুর মালামালসহ পুরাতন ও নষ্ট সরকারি যানবাহন রাখা হয় সিএনবির এ কলোনীতে। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকার মালামাল ওই চক্রটি বিক্রি করে দিয়েছেন। সিএনবি কলোনীতে ’বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ নামে একটি অফিস খুলে অপর্কম চালানো হচ্ছে। অভিযোগ ওঠেছে, স্থাণীয় মসজিদ উন্নয়নের নামে সরকারী কলোনীর ঘর ভাড়া, কোটি কোটি টাকার মালামাল বিক্রি করা হচ্ছে। কলোনীতে বৈধভাবে থাকা গ্যাস সংযোগ আবেদন দিয়ে বন্ধ করে এখন ১২ বছর যাবৎ অবৈধ সংযোগ নিয়ে ৫ শতাধিক ঘরের চুলায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ভাড়ার টাকার সরাসরি উপপ্রকৌশলী শামীম আহম্মেদ নিয়ে থাকেন।
ফেরী চালক শাহজাহান মিয়া জানান, তাকে কোনো চিঠি না দিয়ে জোরপূর্বক উপপ্রকৌশলী শামীম ও তার সহযোগিরা ঘর থেকে বের করে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। চাকরি থেকে অবসরে গেলেও এখনো তিনি পেনশনের টাকা পাননি বলেও জানান।
অভিযুক্ত উপপ্রকৌশলী শামীম আহম্মেদ জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। তাছাড়া শাহজাহান মিয়া অবসরে চলে গেছেন বলেই তাকে ঘর ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া বেইলী সেতুর মালামাল বিক্রি করা হয়নি। অনেক সময় তা চুরি হয়ে গেছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ফেরি চালক শাহজাহান মিয়াকে জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টি শুনেছি। তাছাড়া কলোনীতে রাখা লাখ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে বিক্রি, সাধারণ মানুষের কাছে ঘর ভাড়া, অবৈধভাবে কলোনীতে তিতাস গ্যাস সংযোগ, মাদক কেনাবেচার বিষয়টি জানা ছিলনা। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হবে।##

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা