শেখ মামুন হাসান গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি :গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে শহীদ বাবলু স্মরণে স্মৃতিফলকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুন) বিকালে উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সাঁকদহ ব্রীজ সংলগ্ন মহাশশ্মানের পাশে এলজিইডি’র ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বরাদ্দ ব্যয়ে স্মৃতিফলকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
ভিত্তিপ্রস্তর কাজের উদ্বোধন করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও পূজা উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং গাইবান্ধা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য বাবু শৈলেন্দু মোহন রায় (স্বপন)।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পূজা উদযাপন কমিটির গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি বাবু তনয় কুমার দেব, সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু শ্যামলেন্দু মোহন রায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দাস রন্টু, পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার ২ নং প্যানেল মেয়র ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিমন কুমার তালুকদার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কাটাবাড়ী ইউপির সভাপতি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা এমিলি হেমরম, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলুময় রায়, আদিবাসী ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি রতন মাড্ডি, জোহা অ্যান্ড সন্স কন্সট্রাকশনের মো. শাহীন মিয়া প্রমুখ।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ১৯৭১ সালের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন বক্তারা। বীরমুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু মোহন রায় জিবু বাবু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় গণহত্যার খবর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছায়।
ওই খবরের পর ২৬ মার্চ রাতে স্থানীয় মুক্তিকামী ব্যক্তিরা স্থানীয় এমএলএ সদস্য মরহুম জামালুর রহমানের বাসায় জরুরি বৈঠকে বসেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মরহুম ফারাজ উদ্দিন মোল্লা, স্বর্গীয় বাবু রাধিকা মোহন রায়, স্বর্গীয় বাবু বারিন্দ্রনাথ দেব, মরহুম ফজলু হক, মরহুম ছাত্রনেতা আব্দুল মতিন তালুকদার, মরহুম মোতাহার হোসেন, মরহুম ভোলা, স্বর্গীয় অমলেন্দু মোহন রায়, স্বর্গীয় নির্মলেন্দু মোহন রায়, মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মন্টু, মরহুম আ. সামাদ, মরহুম খুররুম, সাকোয়াত হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, শৈলেন্দু মোহন রায় প্রমুখ।
তাদের সম্মিলিত মতামতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গতিরোধে উপজেলার কাটাখালী ব্রিজের আংশকি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী ২৭ মার্চ স্থানীয় মুক্তিকামী জনতার সম্মিলিত চেষ্টায় ব্রিজটির উত্তর অংশে কিছু ভাঙ্গার সময় রংপুর দিক থেকে আসা একটি কনভয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এসময় তারা গুলিবর্ষণ শুরু করলে ঘটনাস্থলে শহীদ হন আবদুল মান্নান আকন্দ, বাবলু মোহন্ত, বাবু দত্ত, আব্দুল মজিদসহ অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ।
এদের মধ্যে শহীদ বাবলু’র স্মৃতি স্মরণে আজকের এই স্মৃতিফলকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ১১ ডিসেম্বর ভোর রাতে ত্রিমুখী আক্রমণে পাক বাহিনীর প্রায় দুই শত সেনা নিহত হয়। পরের দিন ১২ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জ হানাদারমুক্ত হয়।