April 24, 2024, 5:14 am

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের প্রকল্প কাগজে আছে, বাস্তবে নেই

গাইবান্ধা থেকে সোহাগ মৃধা ঃ গাইবান্ধা জেলা পরিষদের এডিপির প্রকল্প কাগজ-কলমে আছে, বাস্তবে নেই। এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে প্রকল্প সংম্লিষ্ট ব্যক্তি এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গাইবান্ধার ‘সাদুল্যাপুর ফরিদপুর ইউপির বৌমারী ঈদগাহ মাঠের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ’ এর জন্য ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এডিপির আওতায় জেলা পরিষদ দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এলাকায় গিয়ে প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফরিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, আমার ইউনিয়নে ‘বৌমারী’ নামে কোনো জায়গা নেই, তাই বৌমারী ঈদগাহ মাঠ থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এটি একটি ভুয়া প্রকল্প, শুধু টাকা আত্মসাতের জন্য জেলা পরিষদের প্রকৌশলীর যোগসাজসে এমন ভুয়া প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে এডিপির আওতায় জেলা পরিষদ একই উপজেলার ‘দামোদরপুর ইউপির জামুডাঙ্গা ছানা মন্ডলের সমাজের ঈদগাহ মাঠ’, ‘কান্তানগর মাঝিপাড়া সুভাষের বাড়ীর পাশে মন্দির’ ও ‘কামারপাড়া ইউপির বাবলা মিয়ার বাড়ীর পার্শ্বে মাদ্রাসা উন্নয়ন’ এর জন্য ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু কোনো কাজ না করেই টাকা তোলা হয়েছে। প্রকল্প কমিটির সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা তুলেছেন জেলা সদ্য সাবেক সদস্য মো. মনোয়ারুল হাসান (জীম মন্ডল)। শুধু ‘কান্তানগর মাঝিপাড়া সুভাষের বাড়ীর পাশে মন্দির’ এর জন্য ৬৫ হাজার টাকা পেয়েছেন সুভাষ চন্দ্র। আগের অর্থ বছরেও একই ইউনিয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য এডিপি ও রাজস্ব খাত থেকে ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে উত্তর ভাঙ্গামোড় চান্দের বাজার মন্ডলপাড়া সামাজিক কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণ, চান্দের বাজার মাঝিপাড়া দুর্গা মন্দির উন্নয়ন, জামুডাঙ্গা গ্রামের জাল্লাদুর মোড়ে শ্মশানঘাট নির্মাণ, জামুডাঙ্গা গ্রামের মাখম মন্ডলের সমাজে সামাজিক কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণ ও একই গ্রামের তোতা মাস্টারের সমাজের ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর নির্মাণ অন্যতম। এসব প্রকল্প জেলা সদ্য সাবেক সদস্য মো. মনোয়ারুল হাসানের (জীম মন্ডল)। এলাকার লোকজন বলেন, আগে যে উন্নয়ন করা হয়েছে, সেটাই আছে, নতুন করে কোনো উন্নয়ন হয়নি। তবে জীম মন্ডল বলেন, প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে করা হয়েছে।
দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলা পরিষদের কোনো খাতের টাকায় এলাকার কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়নি। শুনেছি, প্রকল্প কমিটির লোকজনের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে কিছু কিছু করে টাকা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
ভুয়া প্রকল্প প্রণয়ন ও বিল পরিশোধের বিষয়ে জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাজার হাজার প্রকল্প সব তো মনে রাখা যায় না, চেয়ারম্যান-মেম্বররা যেভাবে প্রকল্প দেন সেটাই লিপিবদ্ধ হয়। কীভাবে যাচাই-বাছাই না করে বা ভুয়া প্রকল্প না দেখে অনুমোদন দেন, সে বিষয়ে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা