April 25, 2024, 3:28 pm

পদ্মা সেতু কি? দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরাই জানে এর কদর।

মাদারীপুরের রাশেদ ভুঁইয়া নামের এক ব্যাক্তি জানান ফেরি ঘাটে এসে এম্বুলেন্স আটকে মাকে হারানো সন্তান জানে পদ্মা সেতু কি?।
৩ ঘন্টা দেরি হওয়াতে ইন্টারভিউ দিতে না পারা বেকার ছেলেটি জানে পদ্মা সেতু কি?।
কুয়াশার কারনে ফেরি বন্ধ হলে ফ্লাইট মিস করা রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী জানে পদ্মাসেতু কি?।
সারাবছর পরিচর্যার পরে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরিঘাটের গরমে থেকে বস্তায় পচা সবজিগুলো দেখা কৃষকটি বলতে পারবে পদ্মা সেতু কি?!!
প্রচণ্ড ঝড়ে পদ্মায় ট্রলার সহ ডুবে যাওয়া সন্তানকে খুজে না পাওয়া বাবা মা জানে পদ্মা সেতু কি?!!

সোহেলের বাড়ি মাদারীপুরে। চাকরি করেন ঢাকায়। সেখানেই থাকেন। মাঝে মধ্যে ছুটিতে বাড়ি আসতেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরতেন। রবিবার সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে তাঁকে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেল।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মৃদু হাসি দিয়ে সোহেল । চোখেমুখে উচ্ছ্বাস নিয়ে বলেন, ‘আর ঢাকায় থাকব না। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে। এখন বাড়িতে থেকেই আসা-যাওয়া করে অফিস করব। বাড়ির মানুষের সঙ্গে থাকব। এটি ভেবেই যেন আনন্দে উৎফুল্লে বারবার হারিয়ে যাচ্ছি।’
আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হচ্ছে পদ্মা সেতু। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতু উদ্বোধন করবেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এ ঘোষণার পর উচ্ছ্বাসে ভাসছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরা।
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় অনেক গুলো
গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কেউ কেউ গরমের মধ্যে থেকে ক্লান্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে সবার মুখেই ছিল স্বস্তির হাসি।

পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় থাকা দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর অনেক জনের সঙ্গে কথা হয়। সেতু উদ্বোধনের খবরে উল্লাসে মেতেছিলেন তাঁরা। তারা বলছেন, কয়েক বছর আগেও পদ্মা সেতু নির্মাণ অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে ছিল। সব শঙ্কা কাটিয়ে পদ্মা সেতু হয়েছে। পদ্মা সেতু তাঁদের জন্য কী, তা তাঁরাই সবচেয়ে ভালো জানেন। কিছুদিন পরেই সেতু দিয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাবেন— এটি ভেবেই যেন তাঁদের মনে আনন্দের বাঁধ ভেঙেছে।

শিমুলিয়া ঘাটে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন বাগেরহাট এক ব্যাক্তি বলেন, ‘আমরা যারা পদ্মা পাড়ি দিতে ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি, তারা জানি ঘাটে এসে কত ধরনের বিড়ম্বনার পড়েছি। এক মাস পরেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে। আমাদের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। আমরা যে কতটুকু খুশি তা ভাষায় বলে প্রকাশ করা যাবে না।’

সেলিনা বেগম (৫৬) জানান, তিনি ঢাকার যাত্রা বাড়ি এলাকায় সপরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর বাবার বাড়ি বরিশালের শহরে। তাঁর ভাষ্য, কয়েক বছর আগেও ভাবেননি কখনো সড়কপথে বাড়ি যাবেন। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসাহসিকতার কারণে নিজেদের টাকায় খরস্রোতা পদ্মা সেতু হলো। আর কয় দিন পরেই খুব সহজেই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এটি কতটা আনন্দের তা আমরাই জানি।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা