April 25, 2024, 9:56 am

গৃহবধূকে অপহরণের পর ধর্ষণ \ আসামী গ্রেফতার

শামীম আখতার বিভাগীয় প্রধান (খুলনা):কেশবপুরে এক গৃহবধূকে অপহরণ করে নিয়ে বাসা-বাড়ীতে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষনের মামলার আসামী মিশু দপ্তরী নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনায় গৃহবধুর স্বামী ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জুন (বুধবার) কেশবপুর থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই গৃহবধুকে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে পুলিশ।
থানা ও সুত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দীন নির্দেশে মামলার তদন্ত অফিসার শেখ ওহিদুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শনিবার রাতে পাশর্^বর্তী মনিরামপুর উপজেলার রতনদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিশু দপ্তরীকে (২৬) গ্রেফতার করে। সে রতনদিয়া গ্রামের হাসেম দপ্তরির ছেলে।
উল্লেখ্য, পাশর্^বর্তী মনিরামপুর উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ তার স্ত্রীকে নিয়ে কেশবপুর পৌর শহরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে রবিউল ইসলামের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। গত ২৪ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে আব্দুল লতিফের স্ত্রী ভাড়ার বাড়ি থেকে বাজার করার উদ্দেশ্যে বের হন। শহরের টাইগার মোড়ে মিন্টুর মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে পৌছালে সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবস্থানরত মিশু দপ্তরি ও সাগর কৌশলে একটি সাদা প্রাইভেটকারে গৃহবধূকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরের দিন ২৫ জুন (শুক্রবার) সকালে ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডাস্থ ময়লার মোড়ে প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকায় কবির হোসেনের ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। সেখানেই তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক একাধিকবার ধর্ষন করে কবির হোসেন। পরবর্তীতে ২৭ জুন (রবিবার) সন্ধ্যায় আব্দুল লতিফের স্ত্রী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায়, কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের শেখ ফজলার রহমানের ছেলে শেখ কবির (৩৫), পাশর্^বর্তী মনিরামপুর উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের হাসেম দপ্তরির ছেলে মিশু দপ্তরি (২৬), মির্জানগর গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে সাগর (৩০) ও গেন্ডা গ্রামের মোশাররফ হোসেন (৪৮) তাকে অপহরণ করে নিয়ে আটকে রেখেছে। সেখানে একটি রুমের মধ্যে আটক রেখে শেখ কবির তাকে একাধিকবার ধর্ষন করেছে বলে স্বামীকে মোবাইল ফোনে ওই গৃহবধূ জানান।
অপহরনকারীরা ২৮ জুন (সোমবার) স্ত্রীকে ফেরত দেওয়ার কথা বলে স্বামী আব্দুল লতিফের ব্যবহৃত মুঠোফোনে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন। অপহরকারীদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে স্বামী আব্দুর লতিফ ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন এবং বাকি টাকা দেওয়ার জন্য তাদের অবস্থান জেনে নেন। এরপর স্বামী ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডাস্থ ময়লার মোড়ে প্রাইমারি স্কুলের সংলগ্ন এলাকায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে পুলিশি সহযোগিতা কামনা করেন। এমন খবরের ভিত্তিতে সাভার মডেল থানা পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কবির হোসেনের ভাড়াটিয়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই গৃহবধুকে উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সাগর নামের এক যুবককে আটক করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকি অপহরকারীরা কৌশলে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ঘটনা উল্লেখ করে ৩০ জুন (বুধবার) গৃহবধুর স্বামী আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় মামলা করেন। যার মামলা নং-১২। মামলার পর ১ জুন (বৃহস্পতিবার) সকালে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন ।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার (ওসি) বোরহান উদ্দীন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে গৃহবধুর স্বামী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন ওই মামলার আসামী মিশু দপ্তরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে রবিবার সকালে যশোর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা