March 28, 2024, 4:05 pm

মমতা কে জামদানী শাড়ি উপহার দিতে মনোবাসনা করেছেন শেখ কামাল উদ্দিন

বি এম বাবলুর রহমান (বিশেষ- প্রতিনিধি)ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জামদানী শাড়ি উপহার দিতে মনোবাসনা ব্যাক্ত করেছেন বাংলাদেশ মোঃ শেখ কামাল উদ্দিন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজয়ের স্মরণের ইচ্ছা প্রাকশে মোহাম্মদ শেখ কামাল উদ্দিন বলেন
আপনি শুধু ধনিয়াখালি শাড়ি পরেন। আমার খুব ইচ্ছা, সুযোগ পেলে আপনাকে একটি জামদানী শাড়ী উপহার দিব।

বাংলাদেশের জন্মনুসারে আমরা বাঙালীহলেও বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত। যা তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন।মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও ১৯৫৬ সালে এ আন্দোলন শেষ হয়।

উপরোক্ত বিষয় এখানে উপস্থাপন করার কারণ হলো,আমরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা অর্জন করলেও আমাদের পার্শবর্তী বন্ধু দেশ ভারতের কলকাতায় বাংলা ভাষাভাষী সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। আর কলকাতার নাম উচ্চারণ করলেই আমার চোখে ভেসে উঠে মমতাময়ী,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। যার বর্তমান যুগে ভারতে প্রতিটি আনন্দোলন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গণতান্ত্রীক আনন্দোলন।

আমার আজকে আলোচনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন এবং আমার ইচ্ছে পূরণ। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের মারফত যতটুকু জানলাম। রাজনীতিতে হাত পাকানোর আগে দক্ষিণ কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন একেবারেই সাধারণ ছিল। আর পাঁচটা মেয়ের মতোই প্রথমে স্টেনোগ্রাফারের কাজ, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকার কাজ, গৃহশিক্ষকতা এমনকী সেলসের কাজও করেছেন মমতা। তারপরই রাজনীতিতে প্রবেশ এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাকীটা ইতিহাস।

রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নানা মহলে হাজারো কথা, গল্প চালু রয়েছে। একার হাতে দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম শাসনের ইতি ঘটিয়ে ৩৪ বছর পরে বাংলার মাটিতে ঘাসফুল ফুটিয়ে অনন্য রেকর্ড গড়ে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন বাম রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে, নিজের দল তৈরি করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ছিলেন মমতা। সেই লড়াই সম্পর্কে সকলেই কমবেশি জানেন। ভারত-বাংলার অগ্নিকন্যা নামে পরিচিত মমতাকে নিয়ে রাজনীতির বাইরেও জানার অনেক কিছু রয়েছে। তাঁর অজানা দিকগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক একনজরে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু ধনিয়াখালি শাড়ি পরেন। এই বিশেষ শাড়ি হুগলির ধনিয়াখালি ব্লকে তৈরি হয়। অনেক রঙের পাওয়া গেলেও দিদি শুধু সরু পাড় দেওয়া সাদা শাড়িই পরতে পছন্দ করেন।দিদি মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যেমন ছিলেন, পরেও তেমনই রয়েছেন। হাওয়াই চটি পরেই তিনি সব জায়গায় যাতায়াত করেন। সংসদে হোক অথবা ভ্যাটিকান সিটি, সর্বত্রই মমতার অবাধ বিচরণ হাওয়াই চটিতে। তবে তিনি শুধুমাত্র সাদা চটি ও নীল স্ট্রিপের চটি পরেন। অন্য কোনও রঙের স্ট্রিপ তাঁপ পছন্দ নয়।

এই বয়সেও হেঁটে মাইলের পর মাইল চলে যেতে পারেন মমতা। মিছিল হোক অথবা অন্য কোনও কারণ, মমতার সঙ্গে হাঁটার স্পিডে পেরে ওঠেন না হাঁটুর বয়সীরা। দিনে প্রতিদিন ট্রেডমিলে ৫-৬ কিলোমিটার হাঁটেন মমতা। এমনকী বিধানসভার অলিন্দেও হাঁটতে দেখা যায় মমতাকে। দলের ঘনিষ্টরা বলেন, দিদি একটানা ১০ কিলোমিটার স্বচ্ছ্বন্দে হাঁটতে পারে।

দিদি আঁকতে ভালোবাসেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় বড় বড় আঁকা তিনি সম্পূর্ণ করতে পারেন। ছবি একে তা বিক্রি করে দলের সংগঠনের জন্য টাকা জমান মমতা। এছাড়া সেই টাকার একটা অংশ চ্যারিটিতে যায়।
গান গাইতে ভালোবাসেন মমতা। প্রশিক্ষিত গায়িকা না হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ভীষণ পছন্দ দিদির। বিভিন্ন সভায়, এমনকী সরকারি সভাতেও শেষে দিদি গান গেয়ে ওঠেন। এমনকী ট্রাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজাকেও বাধ্যতামূলক করেছেন মমতা।

প্রকৃতি ভালোবাসেন তৃণমূল নেত্রী। আর তাই সময় পেলেই ছুটে যান জঙ্গলমহল অথবা উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায়। উত্তরবঙ্গে কয়েকমাস পরপরই যান মুখ্যমন্ত্রী। তবে তা প্রশাসনিক কাজের জন্য। জঙ্গলমহলেও সেই একই কাজে লেগেও দুই জায়গাই প্রাণের কাছাকাছি মমতার।

যাইহোক এ জাতীয় কাজের জন্য হয় তো মমতা দিদিকে আমার ভালো লাগে। তবে ভালো লাগা থেকে আমার ভালো ইচ্ছা পরিণত হয়।

ইচ্ছা প্রকাশে পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিদিকে বলছি,
সুপ্রিয় মমতা দিদি,
আমি বাংলাদেশের মানুষ,আর আপনার বাংলা ভাষাভাষী কথায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আমার পক্ষ থেকে আপনাকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ভালবাসা ও অভিনন্দন। আপনি জানেন, বাংলাদেশের মানুষ আন্তরিক এবং অতিথিপরায়ন। এটাই আমাদের সংস্কৃতি, নিশ্চয়ই পূর্বে এর উষ্ণতা আপনি উপভোগ করেছেন। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিবাহিত হলেও পশ্চিমবঙ্গের সাথে অনেক অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গেছে। আমরা বাংলাদেশিরা আপনার কাছে কিছু চাই না। আপনি আবার ক্ষমতায় এসে আমাদের প্রাপ্র্য দাবী গুলো বুঝিয়ে দিন।

আপনার বিশ্বাস না হলে আমি আপনাকে অনুরোধ করব, আপনি একটু কানপেতে বাংলাদেশের তিস্তাপাড়ের মানুষের গোঁঙ্গানীর শব্দ শোনার চেষ্টা করুন। আশা করি ক্ষমতায় এবার আসলে, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিবেন। আপনি অবশ্যই অবগত যে, তিনদিনের জন্য পরীক্ষা মূলক ভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালানোর অনুমতি নিয়ে আজো চলছেই, ফারাক্কা বাঁধ আমাদের গলার ফাঁস, ওখানে ও পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিবেন। বিএসএফ কে বাধ্য করুন সীমান্তে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে। ফেলানী হত্যার বিচার করুন সঠিক ভাবে।

বাংলাদেশের ইলিশ আপনাদের প্রিয় আমরা জানি। আমাদের ন্যায্য দাবী গুলো পূরন করুন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ইলিশের চাহিদা পূরন করে উদ্বৃত্ত থাকলে আমরা বাংলাদেশিরা খাবো। প্রয়োজনে জনমত গঠন করবো। আপনি জানেন বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা সম্বন্ধে।প্রিয় মমতা দিদি,আপনি শুধু ধনিয়াখালি শাড়ি পরেন। আমার খুব ইচ্ছা, সুযোগ পেলে আপনাকে একটি জামদানী শাড়ী উপহার দিব। শক্তিশালী দক্ষিন এশিয়া গড়তে হলে বাংলাদেশকে পাশে রাখতেই হবে। এজন্য পারস্পারিক সম্পর্কে আস্থা বৃদ্ধি জরুরী। আমাদের বাংলাদেশের জনপ্রিয় পত্রিকা, দৈনিক যুগান্তরে দেখলাম, আপনি নন্দীগ্রামে সাড়ে ৪ হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন।আশা করি জয় আপনার।আপনার হাসিতে ১৬ কোটি বাঙালী হাসবে এমনটাই আশা করে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

_মোহাম্মদ শেখ কামালউদ্দিন স্মরণ
লেখক ও কলামিস্ট

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা