April 25, 2024, 5:33 pm

ফেনীতে পুলিশের গায়েবি মামলায় সাংবাদিকের কোমরে রশি!

ফেনীর পুলিশের দেয়া গায়েবি মামলায় এস এম ইউসুফ আলী নামে এক সাংবাদিককে সোমবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা হয়। এ নিয়ে জেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও সচেতন মহলে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে।

আদালত জানায়, ইউসুফ আলীকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার ইউসুফ দৈনিক অধিকারের ফেনী ব্যুরো চিফ ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফেনী রিপোর্ট এর সম্পাদক।

তিনি দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

ইউসুফ আলীর মামলার কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু জানান, ফেনীর সাবেক পুলিশ সুপার প্রতিহিংসাবশত ২০১৯ সালে সাংবাদিক ইউসুফ আলীসহ চারজন সাংবাদিককে জেলার বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু রাজনৈতিক মামলায় হয়রানিমূলকভাবে চার্জশিটে যুক্ত করেন। এসব মামলার এজাহারে তাদের কারোই নাম ছিল না। পরবর্তীতে সবকটি মামলায় তারা জামিন লাভ করে আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিলেন।

ছাগলনাইয়া থানায় দায়ের করা একটি মামলায় ভুলক্রমে হাজিরা দিতে না পারায় ইউসুফ আলীর জামিন বাতিল হয়। পুলিশ সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাকে ঘুম থেকে তুলে গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়।

এদিকে ইউসুফ আলীর গ্রেপ্তারের খবরে ফেনীতে গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

দাগনভূঞা থানা পুলিশ তাকে কোমরে রশি বেঁধে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসায় সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বলেন, একজন গণমাধ্যমকর্মীকে এভাবে ধরে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা ন্যাক্কারজনক। এটা সাংবাদিকতা পেশার প্রতি অবজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জসিম মাহমুদ বলেন, এক শ্রেণির অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এ ধরনের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন ফেনী শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট লক্ষণ বণিক বলেন, ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশে সাংবাদিকদেরকে মামলায় জড়িয়েছেন।

একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে এভাবে অপদস্ত করা কোনভাবেই আইনসম্মত নয়।

সাংবাদিক ইউসুফ আলীকে গ্রেপ্তার করে রশি বেঁধে আদালতে পাঠানোর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি।

সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বিষয়টি তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, কোমরে রশি বেঁধে আনার বিষয়টি তার অগোচরে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়মানুযায়ী গ্রেপ্তার সাংবাদিককে আদালতে পাঠিয়েছে বলে তিনি জানান।

ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, অতিরিক্ত সতর্কতা স্বরূপ আসামির কোমরে রশি লাগানো হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি সাংবাদিক জানা ছিল না। যখন জেনেছি, তখন রশি সরিয়ে নিতে বলেছি। সূত্র: ইউএনবি নিউজ.কম

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা